বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: পাচারের শিকার হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ ভানুয়াতুতে করুণ দশা ১০৩ বাংলাদেশীর। তাদেরকে সেখানে যাওয়ার পর অর্থ, চাকরি ও বিদেশ সফরের সুযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ব্যবসা ধরিয়ে দেয়া হবে। দেয়া হবে বিজনেস কার্ড। সেই কার্ডের ওপর ভিত্তি করে তারা অস্ট্রেলিয়া সফরে যেতে পারবে। কিন্তু ভানুয়াতু পৌঁছার পর তাদের সেই আশা এখন দুরাশায় পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে মামলার কার্যক্রম শুরু হতে বিলম্ব হচ্ছে। আর এতে বাড়ছে ওইসব বাংলাদেশীর দুর্ভোগ।
এতে বলা হয়েছে, ‘মি. প্রিন্স’ নামে একটি কোম্পানির মালিক এসব যুবককে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গিয়েছেন ভানুয়াতু। পাচার হওয়া যুবকদের একজন শাহিন খান। তিনি বলেন, ‘মি. প্রিন্স’ হলো ভানুয়াতুর রাজধানী পোর্ট ভিলার আসবাবপত্রের স্টোর। এর মালিক তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেন অর্থ দেয়ার, কাজ দেয়ার এবং আন্তর্জাতিক সফরের ব্যবস্থা করে দেয়ার। শাহিন বলেন, আরো প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আমরা ভানুয়াতু পৌঁছার পরই ব্যবসা করতে পারবো। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আমাদেরকে বিজনেস কার্ড দেবেন, যাতে আমরা অস্ট্রেলিয়া যেতে পারি। মালিক যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার পুরোটাই ছিল ভুয়া।
শাহিন খান ও অন্যরা বাংলাদেশ থেকে পোর্ট ভিলায় পৌঁছার পর তারা বলেছেন, তাদের নিয়োগকারী হলেন বাংলাদেশী কয়েকজন নাগরিক। অভিযুক্ত চারজন হলেন আনোয়ার হোসেন, পলাশ হোসেন, শিকদার সুমন ও তার স্ত্রী বুক্সো নাবিলা বিবি। তাদেরকে গত নভেম্বরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এটাই সবচেয়ে বড় মানব পাচার ও দাসত্বের ঘটনা।
কিন্তু এই মামলার শুনানি দ্বিতীয় দফায় তিন সপ্তাহের জন্য মুলতবি করা হয়েছে। ওদিকে পাচার হওয়া বাংলাদেশীদের কোনো আয় নেই। তারা কোনো কাজ করতে পারছেন না। এ জন্য দেশে ফেরার সামর্থ্যও নেই তাদের। শাহিন খান বলেছেন, আমাদের কাছে মনে হচ্ছে জেলখানায় আটকা পড়েছি। মামলাটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। জানি না কবে নাগাদ এর শেষ হবে। যদি এভাবেই আমাদেরকে দীর্ঘ সময় থাকতে হয়, তাহলে এভাবে আমরা আর বেঁচে থাকতে পারবো না।
ভানুয়াতুর হিউম্যান রাইটস কোয়ালিশনের এরিক পাকোয়া বলেছেন, আদালতের কার্যক্রম আরো বিলম্বিত হলে এসব মানুষের দুুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পাবে। তার ভাষায়, এ জন্য আমি উদ্বেগ তুলে ধরেছি। এসব মানুষের যেন ক্ষতিপূরণ পান সে দাবি করেছি।
বাংলা৭১নিউজ/এস.বি