চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার রহমতগঞ্জ এলাকায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত যাত্রামোহন সেনগুপ্তের শত বছরের পুরোনো বাড়ির একাংশ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে একটি মহল। সোমবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ শুনে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত স্থানীয়দের নিয়ে ভবনটির সামনে অবস্থান নিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে বাধা দেন। দীর্ঘক্ষণ উভয়পক্ষের মাঝে উত্তেজনার পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে উপস্থিত হয়ে উচ্ছেদ বন্ধ করে ভবনটি সিলগালা করে দেন।
জানা গেছে, ওই জায়গার দাবিদার ফরিদ উদ্দিনের ছেলে ফরহাদ ও ফয়সালের সঙ্গে যুবলীগ নেতা পরিচয়দানকারী গিয়াসউদ্দিন সুজনের নেতৃত্বে অর্ধশত তরুণ ও যুবক স্কুলে প্রবেশ করেন। তাদের সাথে ছিল অনেক শ্রমিক। ‘কেন ভবন ভাঙা হচ্ছে’রানা দাশগুপ্ত জানতে চাইলে নিজেকে এম ফরিদ চৌধুরীর মেয়ের জামাই পরিচয় দিয়ে গিয়াস উদ্দিন সুজন জানান, আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের লোকজন তাদের ভবনের দখল বুঝিয়ে দিয়েছে এবং সেজন্য তারা ভবনটি ভাঙছেন।
রানা দাশগুপ্ত উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আংশিক গুঁড়িয়ে দেওয়া ভবনটি ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত ভবন। এই ভবন আমাদের ঐতিহ্য। আমরা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের এই স্মৃতির সংরক্ষণ চাই। এটা ভাঙতে হলে আমার গায়ের উপর বুলডোজার চালাতে হবে।’জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল হাসান বলেন, ‘সরকার জমিটি বরাদ্দ দিয়েছে। এখন বরাদ্দ দেওয়া জমি নিয়ে আদালতের কোনো আদেশ আছে কিনা সেটা আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখব।
এরপর জেলা প্রশাসক মহোদয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।’জানা যায়, আঠারও শতকের খ্যাতিমান বাঙালি আইনজীবী যাত্রামোহন সেনের গড়ে তোলা এই বাড়ির জমির পরিমাণ প্রায় ২০ গণ্ডা। অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে ঘোষিত বাড়িসহ জমিটি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে শামসুদ্দিন মো. ইছহাক নামে এক ব্যক্তি ‘বাংলা কলেজ’নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সর্বশেষ সেখানে ‘শিশুবাগ’নামে একটি স্কুলের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল।
এদিকে আজ মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) সকালে ‘চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র’এ সংক্রান্তে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষাবিদ ড. অনুপম সেন, কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন এবং রানা দাশগুপ্ত বক্তব্য রাখবেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি আলীউর রহমান।
বাংলা৭১নিউজ/এআর