রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েই চলছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর শেষে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৮৮৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণের হার ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
সূত্র জানায়, এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন শেষে রূপালী ব্যাংকে খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল আট হাজার ৫৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ওই সময় শতকরা হিসাবে খেলাপি ঋণের হার ছিল ১৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গত এক বছরে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৮৩১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরসহ আগামী দুই অর্থবছরে রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি আরও বাড়তে পারে বলে ব্যাংক থেকে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের অগ্রীম পূর্বাভাস বা প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর শেষে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ১০ হাজার কোটি টাকা, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছর শেষে ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে এটি আরও বেড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা দাঁড়াতে পারে।
জানা গেছে, সমাপ্ত অর্থবছর শেষে বা গত জুন শেষে ব্যাংকটিতে অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫৬৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন শেষে ব্যাংকটিতে অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ৫৭৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে গত এক বছরে ব্যাংকটির অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি কিছুটা কমেছে। ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবে, সমাপ্ত অর্থবছরে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ১১ কোটি ৩২ লাখ টাকা আদায় হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ)-এর আওতায় সমাপ্ত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ৯ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল এবং খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যাংকটি খেলাপি ঋণ আদায় করতে পেরেছে মাত্র ২৭২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
এ দিকে রূপালী ব্যাংকের তৃতীয় প্রান্তিকের (মার্চ ২০২৪) এপিএ বিবরণীতে দেখা যায়, গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ৯৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং অবলোপকৃত ঋণ থেকে আদায়ের পরিমাণ ছিল ৮৭ লাখ টাকা।
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর করা তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাসেল-৩ গাইডলাইন অনুসারে মূলধন সংগ্রহ করা এবং ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ কমিয়ে এনে যথাযথ প্রভিশন সংরক্ষণ করা। এছাড়া, হ্যাকিংসহ অন্যান্য প্রযুক্তিগত ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যাংকটিকে উন্নততর প্রযুক্তিগত আবকাঠামোর আওতায় আনা এবং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
বর্তমানে রূপালী ব্যাংকের লোকসানী শাখার সংখ্যা ২৪টি। চলতি অর্থবছর শেষে লোকসানী শাখার সংখ্যা দু’টি কমিয়ে ২২টিতে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ব্যাংকটি। এছাড়া, চলতি অর্থবছরে ব্যাংকটি শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে নগদ ৩৫০ কোটি টাকা এবং অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ১০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ