প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরের ভয়াল স্মৃতি আজও তাড়িয়ে বেড়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলবাসীকে। সিডরের তেরো বছর পরও ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোয় নির্মাণ হয়নি টেকসই বেড়িবাঁধ। এখনও আতঙ্কে দিন কাটে উপকূলবাসীর।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর, স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত হানে উপকূলীয় অঞ্চলে। বাড়িঘর, গাছপালা উপড়ে লণ্ডভণ্ড করে দেয় বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রাণহানি ঘটে বহু মানুষের। বাঁধ ভেঙে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সব কিছু।
সিডরের আঘাতে পটুয়াখালীতে সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৪৬৬ জন, নিখোঁজ ২১১ জন। ১৩ বছর পরও দুঃসহ সেই দিনের কথা মনে করে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন অনেকে। হারানো স্বজনের স্মৃতি হাতড়ে ফেরেন কেউ কেউ। যত্নের অভাবে গণকবরও এখন বন্যপ্রাণীর বাসস্থান।
এলাকাবাসীরা জানান, কবরস্থানগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেউ নেই। স্মৃতি প্রসঙ্গে বলেন, সিডরের সময়ে আমার দুটি বাচ্চা ও স্ত্রীকে নিয়ে কলাগাছে ভেসে অন্য এক গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলাম।
সুপার সাইক্লোন সিডরের পর বাগেরহাটে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০১৬ সালে ৬২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৯ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও শেষ না হওয়ায় হতাশ উপকূলের মানুষ। প্রকল্পের প্রকৌশলী জানান, ২০২১ সালের জুনে বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
উপকূলবাসীরা জানান, এখন পর্যন্ত রাস্তাঘাট ঠিক হয়নি, একটি ভেড়িবাঁধের নির্মাণের কাজ চলছে। এদিকে নদী ভেঙ্গে ভেঙ্গে আবার ভেড়িবাঁধের কাছাকাছি চলে আসছে।
বাগেরহাট সিইআইপি প্রকল্প প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই প্রকল্পের কাজ ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আর অবশিষ্ট কাজও আমরা আগামী জুনের মধ্যে শেষ করতে পারবো।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী সিডরের আঘাতে বরগুনায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৩৪৫ জন। আহত ২৮ হাজারের বেশি। উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি সিডর, মহাসেন, আইলা ও রোয়ানুর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের।
বাংলা৭১নিউজ/এএম