বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: অসংখ্য বাংলা জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা আহমেদ ইমজিয়াজ বুলবুল আর নেই।মঙ্গলবার ভোররাতে রাজধানীর আফতাবনগরের বাসায় হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়।
বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সঙ্গীত ও শিল্পাঙ্গনে।তার অকালে চলে যাওয়া সহকর্মীদের কেউ মেনে নিতে পারছেন না। শোকে স্তব্ধ অনেকেই।
বুলবুলের লাশ রাখা হয়েছে আফতাবনগরের বাসায়।সেখানে জড়ো হয়েছেন কণ্ঠশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, চলচ্চিত্র শিল্পীসহ শিল্পাঙ্গনের সবাই।তারা লাশ দেখে অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না।কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
বরেণ্য এই শিল্পীর লাশ আগামীকাল বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে। সেখানে বেলা ১১ টায় তাকে সর্বস্তরের জনতা শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন।
শহীদ মিনারের শ্রদ্ধা জানানো শেষে বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নেয়া হবে আহমেদ ইমতিয়াজের বুলবুলের লাশ। সেখানে অনুষ্ঠিত হবে তার প্রথম জানাজা। বরেণ্য এ শিল্পীর মরদেহ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলী বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন।
সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদি, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনকচাঁপাসহ বাংলাদেশি প্রায় সব জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীর গাওয়া বহু জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা তিনি। ১৯৭৬ সাল থেকে তার নিয়মিত গান করা। প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি গান লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করে দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
এই জনপ্রিয় শিল্পীর জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায়। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বুলবুল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাইফেল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রণাঙ্গনে। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ স্মৃতি-বিস্মৃতি নিয়ে বহু জনপ্রিয় গান লিখেছেন ও সুর করেছেন।
‘এই দেশ আমার সুন্দরী রাজকন্যা’, ‘আয় রে মা আয় রে’, ‘উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম’, ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘মাঝি নাও ছাইড়া দে, ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সেই রেললাইনের ধারে’, ‘মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’-এমন বহু কালজয়ী গানের স্রষ্টা এ শিল্পী।
তিনি প্রেমের জন্য লিখেছেন- ‘আমার সারা দেহ খেও গো মাটি’, ‘ভাড়া কইরা আনবি মানুষ’, ‘প্রেমের তাজমহল’সহ আরও বহু জনপ্রিয় গান।
ব্যক্তিগত জীবনে এক সন্তানের জনক ছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তার ছেলে সামির আহমেদ।
বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। সূত্র: যুগান্তর।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস