বাংলা৭১নিউজ, জাহেদুল হক, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: কমিউনিটি বীজতলা বা আদর্শ বীজতলা। কয়েকজন কৃষক মিলে এ বীজতলা তৈরি করেন বলে এর নাম কমিউনিটি বীজতলা। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কৃষকদের মধ্যে ক্রমেই এ বীজতলা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনেক কৃষকই এ বীজতলা তৈরির দিকে ঝুঁকছে। এ ক্ষেত্রে কৃষি কর্মকর্তারাও তাদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন।
জানা যায়,কৃষি ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে বীজতলা তৈরির নতুন পদ্ধতি কমিউনিটি। এ পদ্ধতিতে খরচ কম,লাভ বেশি। অন্যদিকে সুস্থ চারা উৎপাদনের নিশ্চয়তা আছে,কোল্ড ইনজুরির ঝুঁকিও তেমন নেই-বলছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.একরাম উদ্দিন। কমিউনিটি পদ্ধতিকে তিনি বীজতলা তৈরির আদর্শ পদ্ধতি বলে আখ্যায়িত করেছেন।
উপজেলার জুঁইদন্ডী গ্রামের কৃষক মো.জসিম উদ্দিন জানান,আগের পদ্ধতির চেয়ে কমিউনিটি পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করলে বীজ,সার,কীটনাশক,জায়গা,শ্রম ও সেচ খরচ অনেকাংশে কম লাগে কিন্তু চারা ভালো পাওয়া যায়। আরেক কৃষক মোহাম্মদ আবছার বলেন,সনাতন পদ্ধতিতে যে জায়গায় ৭০ কেজি বীজ প্রয়োজন হতো সেখানে ৫০ কেজি বীজ লাগে। ফলে বীজতলা তৈরিতে অন্তত দুই হাজার টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী উদ্বিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো.সরওয়ার আলম বলেন,এ বছর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ১১টি স্থানে ১৫ শতক করে কমিউনিটি বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি প্রকল্পের আওতায় এসব কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার,কীটনাশক,বিষশোধনসহ ৫০কেজি করে বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এতে সবদিক দিয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কমিউনিটি বীজতলা তৈরির ফলে চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ জমিতে চাষাবাদ হবে।
জুঁইদন্ডী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জিব চৌধুরী জানান,কৃষকরা সাধারণভাবে যে বীজতলা তৈরি করে তাতে এক শতাংশ জমিতে পাঁচ কেজি বীজধান প্রয়োজন হয়। তাছাড়া জমির কোথাও উঁচু-নিচু হওয়ায় বীজতলার অনেক শিকড় ঠিকমতো গজায় না। এসব বীজতলা পরিচর্যা করাও অনেক সমস্যা। বেশি শীত বা কুয়াশায় অনেক সময় বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে (শীতজনিত রোগ) আক্রান্ত হয়। এতে বীজধান পুড়ে লালচে হয়ে যায়। কিন্তু কমিউনিটি বীজতলায় এসব সমস্যা নেই।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস