বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: পশু হত্যা আর মানবসৃষ্ট প্রতিকূলতায় যখন বাংলাদেশের বন বিপন্ন তখন দেশে আজ প্রথমবারের মতো বিশ্ব হাতি দিবস পালিত হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘হাতি করলে সংরক্ষণ, রক্ষা হবে সবুজ বন’।
পরিবেশবিদরা বলছেন, হাতির আবাসস্থলের ওপর মানুষের সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় এখন যুক্ত হয়েছে হাতি। তাই মানুষকেই বিশালদেহী হাতির সবচেয়ে বড় শত্রু বলে দায়ী করছেন তারা।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ বলছেন, ‘শুধু বিপন্ন নয়, হাতি এখন অতিবিপন্ন প্রাণী। বন উজাড় করে ফেলার কারণেই হারিয়ে যাচ্ছে হাতি।’
হাতি রক্ষায় আইইউসিএনের উদ্যোগে ২০১৬ সালের মধ্যেই ১০ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বন বিভাগের হিসাবে গত ১১ বছরে বাংলাদেশে মানুষের হাতেই মারা পড়েছে ৬২ টি হাতি। আর বন বিভাগ ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণবিষয়ক বৈশ্বিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) চলমান হাতি জরিপের প্রাথমিক ফলাফল বলছে, দেশে সর্বোচ্চ ২০০ হাতি রয়েছে। অথচ ২০০৪ সালের জরিপে এই হাতির সংখ্যা ছিল প্রায় ৩২৭টি।
একসময় বাংলাদেশের মধুপুর গড় থেকে শুরু করে গারো পাহাড়, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার পত্রঝড়া ও চিরসবুজ বন ছিল হাতির অবাধ বিচরণ কেন্দ্র। কিন্তু মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন প্রতিকূলতায় সে বিচরণ কেন্দ্র্র হয়েছে সংকুচিত। এখন শুধু চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার চিরহরিৎ বনাঞ্চলেই হাতির বিচরণ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
সিকৃবি ক্যাম্পাসে “বিশ্ব হাতি দিবস ২০১৬” উদযাপন
“এক হও বিশ্ব, বাঁচাও হাতি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণি অধিকার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষনকারী সংগঠন প্রাধিকার শুক্রবার সিকৃবি ক্যাম্পাসে “বিশ্ব হাতি দিবস ২০১৬” উদযাপন করেছে।
আজ সকাল সাড়ে দশটায় র্যালীর মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। প্রাধিকারের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ উজ্জ্বল এর পরিচালনায় সভাপতি মনজুর কাদের চোধুরীর সভাপতিত্বে র্যালী পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন প্রফেসর ডঃ মোহন মিয়া ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডঃ এ টি এম মাহবুবে এলাহী, প্রফেসর ডঃ আবু বকর সিদ্দিক, মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডাঃ মোঃ মতিউর রহমান।
আলোচনা সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রাধিকারের কোষাধ্যক্ষ সাহরুল আলম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাধিকারের পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারি মোঃ আনিসুর রহমান ও হিউম্যান রিসোর্স সেক্রেটারি মাহদি রাহী। জিন ব্যাংক সংরক্ষণ নিয়ে উপস্থাপন করেন প্রাধিকারের সাংগঠনিক সম্পাদক (জেনেটিক রিসোর্স) আব্দুস শাকুর ইমরান ও সদস্য রুকসানা উর্মি।
বক্তারা বর্তমান বিশ্বে প্রাণিদের প্রতি মানুষের অবিচারের কথা, বনাঞ্চল দখলে যাওয়ার কথা, শিকার করার কথা তুলে ধরে হাতি সংরক্ষনে জনসচেতনতা ও সরকারি ভূমিকা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন।
প্রাধিকারের সহ সভাপতি বিনায়ক শর্মা বলেন “একটি হাতির জন্য সরিষাবাড়ীর মানুষ যে সহমর্মিতা দেখিয়েছেন, লোভী শিকারীদের জন্য তা লজ্জাকর”।
বাংলা৭১নিউজ/এম