বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: বিপিএলের ঢাকা পর্বের খেলায় সুবিধা করতে পারেনি সিলেট সিক্সার্স। তিন ম্যাচের দুটিতে হেরে জয়ের স্বপ্নে ঘরের মাঠে খেলতে যায় সিলেট সিক্সার্স। আজ তারা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সকে ২৭ রানে হারিয়ে ঘুর দাড়িয়েছে।
রান-খরায় ধুকতে থাকা বিপিএল আজ সিলেট মাঠে প্রাণ ফিরে পেয়েছে।ঝিমিয়ে পড়া বিপিএলে হঠাৎ চার-ছক্কার ফুলঝুরি। সিলেটে রান-উৎসব করল স্বাগতিক দল আর রংপুর রাইডার্স। উত্তেজনা ছড়াতে থাকা ম্যাচে শেষ পর্যন্ত হাসলেন লিটন, ওয়ার্নার, তাসকিন, সাব্বিরা।
ব্যাট-বলের দারুণ লড়াইয়ে রংপুরকে হারিয়ে দুই ম্যাচ পর জয়ের স্বাদ পেল সিলেট সিক্সার্স। ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী থাকা রংপুর পেল আরেকটি হারের স্বাদ। আগে ব্যাটিং করতে নেমে এবারের বিপিএলের তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৮৭ রান তোলে সিলেট। জবাবে রংপুর সব অলিগলি ঘুরে ১৬০ রানে আটকে যায়। ২৭ রানের জয়ে স্বস্তির পরশ পেয়েছে সিলেট।
শেষ দুই ম্যাচে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সহজ জয় হাতছাড়া করে রংপুর। ঢাকার বিপক্ষে ২ ও রাজশাহীর বিপক্ষে ৫ রানে ম্যাচ হেরেছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। সেখানে এবারের লক্ষ্য ছিল প্রায় আকাশছোঁয়া। টি-টোয়েন্টির মহাতারকা ক্রিস গেইল থাকায় আশায় ছিল রংপুর। তার কাছ থেকে একটা বিস্ফোরক ইনিংসের আশা করেছিল দল। কিন্তু হতাশ করেন ক্যারিবীয় ওপেনার।
সোহেল তানভীরের বলে গেইল উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৭ রানে। এর আগে মেহেদী রানার দ্বিতীয় ওভারে সাজঘরে ফেরেন মেহেদী মারুফ (৩) ও অ্যালেক্স হেলস (০)। ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ব্যাকফুটে রংপুর। খাদের কিনারা থাকা দলকে টেনে তোলেন মোহাম্মদ মিথুন ও রাইলি রুশো। ৮৯ রানের জুটি গড়েন দুজন। ওভার প্রতি দশের বেশি রান তুলে পাওয়ার প্লে’তে রংপুরের রান ৩ উইকেটে ৬২। ১০ ওভারে ওই রান হয় ৮৮।
শেষ ৬০ বলে জয়ের জন্য ১০০ রান লাগত রংপুরের। রুশো যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, ততক্ষণ আশা টিকে ছিল তাদের। কিন্তু তাসকিনকে বোলিংয়ে এনে রংপুরের সব আশা গুড়িয়ে দেন ওয়ার্নার। ইনফর্ম পেসার রুশোকে প্রথমে বোল্ড করেন। এরপর মিথুনকে তালুবন্দি করান ডিপ মিড উইকেটে। ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৩২ বলে ৫৮ রান করেন রুশো। মিথুন ২৯ বলে করেন ৩৫ রান।
লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়ার পর পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়ে আনেন হাওয়েল, মাশরাফি ও নাহিদুল। দুই জীবন পাওয়া মাশরাফির ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। হাওয়েল ১৩ ও নাহিদুল ৫ রান করেন।
এর আগে ‘ব্যাটিং স্বর্গ’ উইকেটে টস হেরে যেন মহাখুশি সিলেট সিক্সার্স। মাশরাফিদের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে সিলেট এমন উড়ন্ত সূচনা পাবে, তা হয়তো ভাবেনি কেউ। অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার নিজেকে তিনে নামিয়ে লিটনের সঙ্গী করে সাব্বিরকে পাঠান ওপেনিংয়ে।
পরিকল্পনা ‘হানড্রেড পারসেন্ট’ সফল। লিটন ও সাব্বির ৮.৩ ওভারে তোলেন ৭৩ রান। যেখানে সাব্বির হয়ে থাকেন নীরব দর্শক। ২০ বলে ২০ রান তোলে হাওয়েলের স্লোয়ারে আউট হন সাব্বির। আর লিটন ছিলেন উড়ন্ত, দুর্দান্ত। সিলেট মাঠে ওঠে লিটন ঝড়। ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৪৩ বলে করেন ৭৩ রান। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস সাজাতে রংপুরের বোলারদের তুলোধুনো করেছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। পুরো ইনিংসে ডট বল খেলেছেন মাত্র ৯টি। আর বাকিগুলোতে ব্যাট হাতে কড়া শাসন করেছেন।
তিনে নেমে ওয়ার্নার যেন চেনা রূপে। লিটনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আক্রমণ চালান সিলেটের অধিনায়ক। লিটন রান আউটে ফেরার পর ওয়ার্নার যেন হয়ে উঠেন আরো আক্রমণাত্মক। ২২ গজকে বানিয়ে ফেলেন রানের ফোয়ারা। তাকে সঙ্গ দেন নিকোলাস পুরাণ। ক্যারিবীয় হার্ডহিটার ১৬ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৬ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন।
ঝড় তোলা ওয়ার্নার ১৯তম ওভারের শেষ তিন বলে ডানহাতি হয়ে ছক্কা আর চারে তোলেন ১৪ রান। অবাক করে দেন স্টেডিয়ামের দর্শক আর টিভির সামনে বসা ক্রিকেটপ্রেমীদের। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৩৬ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৬১ রান। বিপিএলে নিজের দ্বিতীয় ফিফটিতে দলের রান চূড়ায় নিয়ে যান অসি তারকা।
সেই রানের পাহাড় টপকাতে পারেনি রংপুর। পাঁচ ম্যাচে সিলেটের এটি দ্বিতীয় জয়। রংপুরের ছয় ম্যাচে চতুর্থ পরাজয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ