মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
চিপসের প্যাকেট ১, ডাবের খোসা ও দইয়ের পাত্র ২ টাকায় কিনবে ডিএনসিসি সিরাজগঞ্জে গ্যাস লাইনের পাইপ স্থাপনের সময় মাটিচাপা পড়ল শ্রমিক দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চুয়াডাঙ্গা-যশোরে স্বস্তির বৃষ্টি ১০ মে ঢাকায় সমাবেশ করবে বিএনপি ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ইলিশের উৎপাদন বেড়ে ৫.৭১ লাখ টন: মন্ত্রী চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানো নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সুন্দরবনে আগুন কেন, গভীরভাবে খতিয়ে দেখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর লোডশেডিং আগের তুলনায় কমেছে, দাবি জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রীর কাছে শপথ নিলেন লালমনিরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে বোবা ছেলেকে কুমিরের মুখে ফেললেন নারী ইউক্রেনের কাছে পারমাণবিক মহড়ার নির্দেশ পুতিনের চট্টগ্রামে কালবৈশাখীর তাণ্ডব : সড়কে গাছ পড়ে যান চলাচল ব্যাহত দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে একীভূত হবে না ন্যাশনাল ব্যাংক, নিজেরাই সবল হতে চায় প্রাথমিকে মঙ্গলবার থেকে স্বাভাবিক রুটিনে ক্লাস রাষ্ট্রপতির সঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সাক্ষাৎ ধামরাই ঝড়ে টিনের চালা ভেঙে পড়ে দুই নিরাপত্তারক্ষী নিহত হিলি দিয়ে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি মাঠে কাজ করছিলেন স্বামী, খাবার দিতে গিয়ে বজ্রপাতে গৃহবধূ নিহত

ওষুধ ও পথ্যের সাহায্যে পাইলস চিকিৎসা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০১৭
  • ৩৩৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: আমাদের রোগ ব্যাধির মধ্যে মলদ্বারের রোগেই সবচেয়ে বেশি স্ব-চিকিৎসা এবং হাতুড়ে চিকিৎসা হয়। কিছুটা ভয় এবং বিব্রতকর অনুভূতির জন্য এ জাতীয় রোগ হলে রোগীরা ডাক্তার দেখাতে চান না।

রোগীরা নিজে নিজে অথবা সস্তায় পাওয়া হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে বেশি যান। বিভিন্ন কুসংস্কার এবং মলদ্বারের সব রোগই পাইলস এই ভ্রান্ত ধারণার কারণে চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি করেন যা কখনও কখনও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে। হয় রোগটি শুরু থেকেই ক্যান্সার অথবা অবহেলার কারণে ইতিমধ্যে সেখানে ক্যান্সার হয়ে গেছে।

পাইলসের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে টয়লেটে রক্ত যাওয়া, মাংসপিণ্ড ঝুলে পড়া ও ব্যথা হওয়া। পাইলস যখন বাইরে ঝুলে পড়ে তখন শুধু ওষুদের মাধ্যমে এর চিকিৎসা সম্ভব নয়। যদি মাংসপিণ্ডটি ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া যায় তাহলে বিনা অপারেশনে রিং লাইগেশন পদ্ধতিতে এর চিকিৎসা সম্ভব। আর যদি মাংসপিণ্ডটি ভেতরে ঢুকান না যায় তাহলে অপারেশন করতে হবে। আবার পাইলসে ব্যথা হলে তার কারণ হচ্ছে থ্রম্বসিস, পচনধরা (গ্যাংথ্রিন) বা ঘা হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে অপারেশনই যথাযথ চিকিৎসা।

যখন টয়লেটে টাটকা লাল রক্ত যায় এবং বাইরে কোনো বড় ধরনের মাংসপিণ্ড ঝুলে না থাকে সেক্ষেত্রে ওষুধ ও পথ্যের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে। তবে চিকিৎসককে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে, কী কারণে রক্ত যাচ্ছে। বিশেষ করে পায়ুপথের ভেতর কোনোরূপ ক্যান্সার আছে কি না।

যে রোগীরা পাইলসে ভোগেন তাদের সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া জাতীয় সমস্যা থাকে। অনেক রোগী আছেন যাদের পেটে গ্যাস হয়। পায়খানার সঙ্গে মিউকাস বা আম যায়। পায়খানা করার পর মনে হয় ক্লিয়ার হয়নি। দুধ, পোলাউ, ঝাল, গরুর মাংস ইত্যাদি খেলে হজমে গোলমাল হয়। টয়লেটে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। অনেকে মলদ্বারের ভেতর আঙ্গুল দিয়ে মলত্যাগ করেন। রোগীরা এ সমস্যাগুলোকে গ্যাস্ট্রিক বা ক্রনিক আমাশয় হিসেবে মনে করেন। চিকিৎসা পরিভাষায় একে আমরা বলি ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রাম’ বা ‘আইবিএস’। এ জাতীয় রোগীদের দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, পোলাউ, ঝাল, বিরিয়ানি খাওয়া নিষেধ।

উপদেশ

পাইলসে যে দুটি রোগ সবচেয়ে বেশি সমস্যা করে তা হল কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া। বেশিরভাগ রোগীর খাদ্যাভ্যাসে ত্রুটি থাকে এবং মলদ্বার ভালোভাবে পরিষ্কার রাখেন না। যদি রোগীর নরম পায়খানা, চুলকানি ও সামান্য রক্ত যায় তাহলে তাকে আঁশজাতীয় খাবার দেয়া যেতে পারে। ডায়রিয়া হয় এমন খাবার পরিহার করতে হবে। মলত্যাগের পর মলদ্বার ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

মলত্যাগের কু-অভ্যাস ত্যাগ

পাইলস রোগীদের তিনটি কু-অভ্যাস দেখা যায়। ১. যেভাবেই হোক প্রতিদিন অন্তত একবার পায়খানা করতে হবেই। এটি না হলে তারা সারাদিন শারীরিক ও মানসিক টেনশনে ভোগেন। ২. সকাল বেলা প্রথমবার যখন মলত্যাগের বেগ হয় তখন তাতে সাড়া দেন না। ৩. পায়খানা ক্লিয়ার হয়নি ভেবে টয়লেটে অনেকক্ষণ বসে থাকেন এবং কোথ দেন যেন রেকটাম থেকে পায়খানা সম্পূর্ণরূপে বের হয়ে যায়। তাদের বিশ্বাস, যদি সামান্য মল ভেতরে থেকে যায় তাহলে সারাদিন অস্বস্তিতে কাটাতে হবে।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন

আমরা প্রচুর রোগী পাই বিশেষ করে শিশুদের সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে পায়ুপথের বিভিন্ন রোগ হয়। পায়খানার পরিমাণ বাড়ে এমন খাবার খাওয়া উচিত। যেমন শাক, সবজি, সালাদ, ফল, ইসুপগুলের ভুসি, গমের ভুসি ইত্যাদি। দৈনিক পরিমিত পানীয় খেতে হবে।

একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের জন্য ৬-৮ গ্লাস পানি প্রতিদিন পান করতে হবে। অনেক রোগীকে এসব উপদেশ দিলে তারা ক’দিন পরে ভুলে যান অথবা আবার ওই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার ক’দিন আগে আবার খান যাতে তাকে বলতে পারেন যে হ্যাঁ, আমি ভুসি বা সালাদ খেয়েছি।

ইসুপগুলের ভুসি দোকানে পাওয়া যায় আবার ওষুধ কোম্পানিও বানায়। এছাড়া আঁশ হিসেবে মিথাইল সেলুলেজ ট্যাবলেটও পাওয়া যায়। বিভিন্ন বিজ্ঞানী আঁশ জাতীয় খাবারের কার্যকারিতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ডা. ওয়েবস্টার (ইংল্যান্ড) ও ডা. মোয়েসগার্ড (ডেনমার্ক)।

পাইলসের ওষুধ

পাইলসের রক্ত বন্ধের জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার হয়ে আসছে যেমন ট্রানেক্স ক্যাপসুল ১টি করে ২ বার ৫ দিন অথবা এনারক্সিল ১টি করে তিনবার ৫ দিন। সর্বশেষ যে ওষুধটি বাজারে এসেছে তার নাম ফ্লাভোনয়িক এসিড। এটির কার্যকারিতা নিয়ে এখনও বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চলছে। প্রাথমিক পাইলসে এটি ভালো কাজ দেবে বলে আশা করা যায়। এটির রোগীদের প্রতি অনুরোধ দয়া করে কোনো চিকিৎসাই নিজে নিজে করবেন না।

মলদ্বারে ব্যবহৃত ওষুধ

পাইলসের সমস্যা এত বেশি যে বেশিরভাগ রোগীই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বা মলম লাগিয়ে থাকেন। এমনকি বাসার জন্য কারো কোনো কারণে একটি অয়েন্টমেন্ট দেয়া হয়েছিল সেটিই নিজে নিজে লাগাতে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের অয়েন্টমেন্ট ক্রিম, সাপোজিটরি, জেল বাজারে পাওয়া যায়।

এসব ওষুধের ভেতর বিভিন্ন ধরনের ওষুধের সংমিশ্রণ থাকে যেমন অবশকারী ওষুধ, স্টেরয়েড ও এন্টিসেপ্টিক। এসব ওষুধের ভেতর অবশকারী ওষুধটি ব্যথা ও চুলকানি কমাতে পারে কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চামড়ায় এলার্জি হতে পারে। লোকাল এনেন্থেটিক ও স্টেরয়েড ওষুধের সংমিশ্রণ মলদ্বারের কষ্ট কমাতে কোনো বাড়তি ভূমিকা রাখে না। আমাদের দেশে যে সব অয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায় যেমন ইরিয়ান, এনুস্ট্যাট, নুপারকেইনাল ও হেডেনসা এবং রিলিচ রেকটাল অয়েন্টমেন্ট। এগুলো মলদ্বারের সামান্য ভেতরে দিনে ২-৩ বার লাগাতে হয় ৭-১৪ দিন।

অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক

লেখক : বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ

বাংলা৭১নিউজ/সিএইস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com