বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ দাবি করেছেন, চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। কিছু সংঘর্ষ, হতাহতের ঘটনা ছাড়া সুশৃঙ্খল নির্বাচন হয়েছে।
শনিবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে ভোটগ্রহণ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিরাট সংখ্যক ভোটারের ভোটদানের মধ্য দিয়ে ৭০৩টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
সিইসি বলেন, নির্বাচনে কালবৈশাখী ঝড়সহ বৃষ্টি হওয়ার কারণে ভোটারদের কষ্ট হয়েছে। তবে আমরা দেশব্যাপী নির্বাচন মনিটরিং করেছি, টিভির খবর মনিটরিং করেছি। এছাড়া বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এতে সংঘর্ষ-গোলযোগ কিছুটা কমেছে।
আশা করছি, সামনের দুই ধাপে কোনো গোলযোগ ছাড়াই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে।
সিইসি আরো বলেন, নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘণ করার দায়ে ৭৯ জনকে ২,৬০,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া অনেককে সাজা দেওয়া হয়েছে। আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা ব্যবস্থা নিয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনের আগে নরসিংদী, ফেনীতে প্রতিপক্ষকে হুমকি দেওয়ায় ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রাজশাহীর বাগমারায় ১৬টি ইউপির নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ৬ হাজার ৭২৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে নির্বাচনী অনিয়মের কারণে ৫২টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে আরো কেন্দ্র বাতিল করা হবে। তবু কোনো অনিয়মের সঙ্গে আপোস করা হবে না। ভোটকেন্দ্রসহ কোথাও কোনো অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। খবর এলে সঙ্গে সঙ্গে ভোটগ্রহণ বন্ধ ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
‘যেখানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, সেখানে সুষ্ঠু তদন্ত করে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর। আশা করি পঞ্চম ধাপে কোনো অনিয়ম ছাড়াই সুষ্ঠু নির্বাচন করা হবে’- যোগ করেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগের ধাপগুলোর চেয়ে চতুর্থ ধাপে নিহত হওয়ার ঘটনা কমে এসেছে। আশা করি, সংস্কৃতির পরিবর্তন হোক। কারো মাথায় আঘাত করা, হানাহানি করার কোনো প্রয়োজন নেই। নিজের ভাইকে মেরে লাভ কি? অভিযোগ দেওয়ার জন্য নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল আছে, আপিল ট্রাইব্যুনাল আছে।
তাই আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে অভিযোগ শান্তিপূর্ণভাবে নিষ্পন্ন করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রার্থী ও সমর্থকদের ধৈর্যর ধরার আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা মোটেই নির্লিপ্ত নই। নির্বাচনের পরেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এলাকায় থাকবে, ব্যবস্থা নেবে। নির্বাচনের আগের রাতেও আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। কাজেই আমরা মোটেই নির্লিপ্ত নই। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশান নিই।
এদিকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীরা যাতে বাধার সম্মুখীন না হন, সেজন্য তা ইন্টারনেটেও জমা দেওয়ার ব্যবস্থা দ্রুত করবেন বলেও জানান সিইসি।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ ও শাহ নেওয়াজ, ইসি’র সচিব সিরাজুল ইসলাম এবং জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদ্দুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
দেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউপিতে এবার ছয় ধাপে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৮ মে পঞ্চম ধাপে এবং ০৪ জুন ষষ্ঠ ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে