বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: নারায়ণগঞ্জ জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) মো. জুয়েল রানার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার আদালতে মামলা করেছেন এক মধ্যবয়সী নারী। সোমবার ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলাটি দায়ের করা হয়। ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামসুন্নানার অভিযোগের বিষয়ে ওই নারীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে (সিএমএম) বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী রায়হান মোর্শেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিচারক মো. জুয়েল রানা এর আগে ঢাকা জজ কোর্টে অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে ২০১৫ সালে কর্মরত থাকাকালীন তার আদালতে ওই নারীর একটি পারিবারিক রিভিশন মামলা বিচারাধীন ছিল। ওই সময় জুয়েল রানা নিজেই বাদীকে ফোন করে ওই আদালতে অস্থায়ী স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকুরী দেন। এরপর তিনি বাদীকে সরকারী চাকরির প্রস্তুতি নিতে ষাঁটলিপি শিখতে ভর্তি হওয়াসহ বিভিন্ন সৎ উপদেশ দেন।
পরবর্তীতে বাদী আদালতে নিয়োগ পরীক্ষা দিলেও সরকারী চাকুরী না হওয়ায় তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি নেন। বাদী চলে গেলেও বিচারক জুয়েল রানা বাদীকে ফোন করে আসতে বলেন। না আসলে পারিবারিক মামলা আপিলে আসলে ক্ষতি করবেন বলে হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে বাদী জুয়েল রানার অফিসে আসেন এবং তার অধীনে কাজ করতে থাকেন।
এরপর ২০১৫ সালের ৮ জুন বিচারক জুয়েল রানা বাদীকে তার স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা বলে তার বাসায় নিয়ে যান। বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে মাথায় রিভলবর ঠেকিয়ে জোর করে তিন বার ধর্ষণ করেন। ওই ঘটনা সম্পর্কে বাদী কাউকে কিছু জানালে খুন করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়া হয়। এরপর বাদী ওই বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
২০১৫ সালের ৩ নভেম্বর বাদী অসুস্থ হলে তাকে বিয়ে করে জুয়েল রানাকে চিকিৎসা করাতে বলেন। পরবর্তীতে জুয়েল রানা ওই বছরের ৮ নভেম্বর র্যাবের এক কর্মকর্তাকে বাদীর বাসায় পাঠিয়ে ধর্ষণ সংক্রান্ত সব কাগজপত্রসহ বাদী তার কাছে নিয়ে আসেন। এরপর খিলক্ষেত থানায় দায়ের করা ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটের একটি মিথ্যা মামলায় বাদীকে জেলে পাঠান।
বাদী জামিনে মুক্তি পেয়ে ধর্ষণের কাগজপত্রের ডুপ্লিকেট কপি তোলার চেষ্টা করলে আসামি ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই অজ্ঞাত পরিচয় লোক দিয়ে বাদীকে তুলে আনেন এবং রমনা থানায় নিজে বাদী হয়ে বাদীর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বাদী চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি কারামুক্তি পান।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস