টলিউডের পরিচালক রাজীব চৌধুরী কিংবদন্তি বলিউড অভিনেত্রী জিনাত আমানের বায়োপিক নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। এই ছবির নাম রাখা হয়েছে ‘শক: দ্য ডাউট’। রাজীবের এই ছবিতে জিনাতের ভূমিকায় দেখা যাবে বাঙালি অভিনেত্রী পায়েল ঘোষকে।
এদিকে নিজের বায়োপিক নির্মাণের খবরে চটেছেন জিনাত আমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করে পরিচালকের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি।
জিনাতের কথায়, ‘আমার বায়োপিক দেখানোটা নিতান্তই বোকামির হবে!’ ইনস্টাগ্রামে দীর্ঘ পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রবীণ অভিনেত্রী। জিনাতের মন্তব্য, ‘আশা করি আমার জীবনকাহিনি পর্দায় তুলে ধরার ক্ষেত্রে পরিচালক স্পর্শকাতর হবেন। আর সেরকম সাহসী লেখক কিংবা অভিনেতা প্রয়োজন আমার বায়োপিকের জন্য।’
জিনাত সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে আরও লেখেন, ‘একজন বয়স্কা মহিলার কথা বলে আপনি এটাকে উড়িয়ে দিতেই পারেন। তবে আমার মতে, আমাকে আড়ালে রেখে আমার বায়োপিক তৈরি করাটা বোকামির হবে। কারণ সত্যি বলতে কী, আমার মতো করে কেউ আমাকে চেনে না। তাই আমার ইনপুট ছাড়া এই বিষয়ে যে কোনো গবেষণা অসম্পূর্ণ হবে। এমনকি বিভ্রান্তিকরও দাঁড়াতে পারে।’
জিনাতের কথায়, ‘আমি বাজি রেখে বলতে পারি যে, আমার সম্পর্কে যেসমস্ত তথ্য পাবলিক ডোমেন রয়েছে, তার বাইরে গিয়েও আমার একটা অন্য জগৎ রয়েছে, যা শুধু আমার কাছেই পরিচিত। তবে এটুকু বলতে পারি, আমার জীবন সফর সত্যিই বেশ আকর্ষণীয়। তবে আমার জীবন সম্পর্কে অপরিচিতরা বায়োপিক তৈরি করছে বলে আমি কিন্তু বাঁধা দিচ্ছি না। শুধু এটুকু বলব, সেক্স সিম্বল বলে যে ট্যাগটা রয়েছে আমার নামের পাশে, সেই ধারণা আজ ৫০ বছর পরেও কিন্তু নাড়ানো অসম্ভব! আর যদি ভুল গল্পকারের হাতে পড়ে তাহলে পরিণতি আরও মারাত্মক হবে।’
জিনাতের এই পোস্ট নজরে এসেছে অভিনেত্রী পায়েল ঘোষের। এ প্রসঙ্গে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পায়েল বলেন, ‘জিনাতজি যেটা বলছেন, সেটা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। আসলে এই বায়োপিক তৈরির ব্যাপারটা এখনও খুবই প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। ইতিমধ্যেই আমাদের প্ল্যান হয়েছে জিনাতজির সঙ্গে দেখা করব। ডিনার বা লাঞ্চ করার প্ল্যান আছে। জিনাতজির সঙ্গে দেখা তো করতেই হবে, নাহলে আমি কীভাবে ওর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বুঝতে পারব। আমাকে তো জানতে হবে জিনাতজিকে। কিন্তু আগে থেকেই উনি পোস্ট করে দিলেন।’
পায়েল আরও বলেন, ‘জিনাত আমানের মতো লুক নেওয়ার জন্য আমি প্রচুর পরিশ্রম করছি। আমার স্কিনটোন বদলাতে হচ্ছে, আমার হেয়ারস্টাইল, পুরো বডি ল্যাঙ্গুয়েজটাই একেবারে বদলে ফেলতে হচ্ছে।’
অভিনেত্রীর দাবি, ‘পরিচালক রাজীব চৌধুরী জিনাতের খুব ভালো বন্ধু। জিনাতের এই পোস্ট দেখে, জিনাতজিকে ফোনও করেছেন। উনি জিনাতকে জানিয়েছেন, এই ছবি মোটেই বায়োপিক নয়। বরং তার অভিনীত ছবিগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই তৈরি। তাই এখনই এধরনের মন্তব্য ঠিক নয়। আর সত্যি বলতে, এখনও খুব প্রাথমিক স্তরেই রয়েছে এই ছবি। দেখা যাক ছবির গল্প কোনদিকে এগোয়।’
সত্তর ও আশির দশকে একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন জিনাত আমান। আবেদনময়ী অভিনেত্রী হিসেবে রুপালি পর্দায় ঝড় তুলেছিলেন তিনি। তার ঝুলিতে আছে ‘হরে রামা হরে কৃষ্ণা’, ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’, ‘ইয়াদোঁ কি বরাত’, ‘দোস্তানা’র মতো আরও অনেক হিট ছবি। অল্প সময়েই বলিউডে শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি; অভিনয় করেছেন দেব আনন্দ, অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, বিনোদ খান্নাসহ তার সময়ের সেরা সব নায়কের সঙ্গে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ