বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
পুলিশের জ্যাকেট পরে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে সাংবাদিক সজীবকে সিলেটের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে রংপুর রিজার্ভ চুরির অর্থ দেশে ফেরাতে ফিলিপাইনের সহযোগিতা চাইলেন রাষ্ট্রপতি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে কমিশন বদ্ধপরিকর: সিইসি ছাত্রশিবিরের নতুন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন ১২ কর্মকর্তা ১৯ জন উদ্ধার না হতেই ফের ৭ অপহরণ! স্লোগানে উত্তাল শহীদ মিনার, শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি নতুন বছরে দেশবাসীর জন্য তারেক রহমানের বার্তা ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে শামীমের লড়াই, তবু খুলনার কাছে হার চট্টগ্রামের দেশ কোনো দলকে ইজারা দেওয়া হয়নি : ধর্ম উপদেষ্টা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিলামের পণ্য কেনা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মেরামত করতে আরেকবার যুদ্ধে অংশ নিতে হবে ৫৫ বছরে বাগদান সারলেন সোহেল তাজ, জানা গেল পাত্রীর পরিচয় পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলা পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত থার্টিফার্স্ট নাইটে বন্ধ থাকবে বার, করা যাবে না নাচ-গান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাড়িবহরে হামলা, আহত ২০ গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতার ম্যুরাল চব্বিশের অভ্যুত্থানে অন্যতম সহযোদ্ধা ছিল ছাত্রশিবির: সারজিস আলম বিপ্লব নস্যাৎ করতে ষড়যন্ত্র থেমে নেই: মঞ্জুরুল ইসলাম

বাবার মাথা নদীতে, দেহ জঙ্গলে: খুনের পর জিডি ছেলের

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে সম্পত্তির জন্য বাবা হাজী উমর আলীকে (৬৫) গলা কেটে হত্যার পর মাথা নদীতে আর দেহ ফেলে দেয় জঙ্গলে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনও করেছে।

এদিকে হত্যার পর ভুয়া মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে বাবা নিখোঁজের সংবাদ জানিয়ে নিজেই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে।

এদিকে ভাই নিখোঁজের ব্যাপারে সন্দেহ হলে চাচা মো. নায়েব আলীও আদালতে আরও একটি মামলা করেন। এ মামলায় ভাবি, ভাতিজা, ভাতিজিসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এর পর সাধারণ ডায়েরি আর মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে হত্যার লোমহর্ষক সব তথ্য।

বুধবার রাতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হত্যায় অংশ নেয়া গ্রেফতারকৃত এক আসামির আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লা।

নিহত ব্যক্তি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের কুমেদপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজী উমর আলী। তিনি দুটি বিয়ে করেছেন। দ্বিতীয় বিয়ে করায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানরা এমন লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লা বলেন, হত্যায় সরাসরি অংশ নেয় তিনজন। পরিকল্পনা ও সহযোগিতায় জড়িত ছিল আরও একাধিক ব্যক্তি। সোর্স নিয়োগ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়াদের মধ্যে মনির আহমেদ (৩০) নামে একজনকে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সাধারণ কৃষক সেজে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তিনি জকিগঞ্জের দক্ষিণ নয়াগ্রাম এলাকার এমাদ উদ্দিনের ছেলে।

পরে মনিরের দেয়া তথ্যে তার শাশুড়ি একই জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার কালাইউড়া গ্রামের মৃত জুবেদ আলীর স্ত্রী সুফিয়া খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়। মনিরকে নিয়ে হত্যার ঘটনাস্থল কালাইউড়ায় সোনাই নদীর তীরে যায়। পরে বিয়ানীবাজার থানায় তথ্য নিয়ে মস্তকবিহীন বেওয়ারিশ মরদেহের কঙ্কাল উদ্ধারের কথা জানতে পারে পুলিশ। থানায় নিহতের জ্যাকেটসহ কাপড়চোপড় দেখে গ্রেফতারকৃত মনির তা শনাক্ত করে। এসব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব আহমেদ তালুকদারের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া হয়।

জবানবন্দিতে মনির জানান, নিহত হাজী উমর আলীর ছেলে কাউসার আহমেদ সিলেট এমসি কলেজে পড়াশোনা করতেন। আর সিলেটে একটি মুরগির দোকানে কাজ করতেন মনির আহমেদ। সেখানেই তাদের মধ্যে পরিচয় হয়। মনির কাউসারকে মামা বলে ডাকেন।

একদিন কাউসার নিজের এলাকার একজন খারাপ লোককে শায়েস্তা করতে হবে বলে জানান। এতে তিনিও রাজি হয়ে যান। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাবা হাজী উমর আলীকে তিনি বিয়ানীবাজারের কালাইউড়ায় নিয়ে যান।

সেখানে মনিরসহ অন্য আসামিদের সহায়তায় তাকে গলা কেটে হত্যার পর মাথা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। আর মৃতদেহ একটি টিলায় ফেলে রাখেন। হত্যার পর তিনি কাউসারের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকাও নেন। ওই দিন রাতে মনিরের শ্বশুরবাড়িতে খাওয়া-দাওয়া ও রাতযাপন করেন হত্যাকারীরা।

পুলিশ জানায়, নিহত হাজী উমর আলী দ্বিতীয় বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বসবাস করছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথম স্ত্রী আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।

মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। প্রথম স্ত্রীর ঔরসজাত সন্তান কাউসার আহমেদ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাবাকে মামলার আপসের কথা বলে প্রথমে হবিগঞ্জ এবং পরে সিলেট যেতে বলেন।

ছেলের কথামতো তিনি প্রথমে হবিগঞ্জ এবং পরে সিলেট যান। কিন্তু যাওয়ার পর আর ফিরে আসেননি। এর পর থেকে তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

গত ৬ জানুয়ারি কাউসার আজমিরীগঞ্জ থানায় বাবা নিখোঁজের সংবাদ জানিয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। এতে নিজের ভুয়া মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করেন।

সাধারণ ডায়েরি করার পর বাড়িতে এসে কাউসার বাবার পালিত ৪টি গরু বিক্রি করে দেন। বাবার জমির দলিলপত্র নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন।

এতে স্বজনরা বাধা দেন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয় তার চাচা মো. নায়েব আলীর। বাবার নিখোঁজে ছেলে ব্যথিত হওয়ার বদলে গরু বিক্রি করছে। জমির দলিলপত্র খুঁজছে। এমতাবস্থায় তিনি ভাবি, ভাতিজা, ভাতিজিসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা করেন।

আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য আজমিরীগঞ্জ থানায় পাঠায়। এর পর থেকে কাউসার আহমেদসহ তার সঙ্গীয়রা আত্মগোপন করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ আবু হানিফকে।

তিনি বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিমের সহায়তা ও নির্দেশনায় মামলাটির তদন্ত শুরু করেন। বিভিন্ন স্থানে সোর্স নিয়োগ করেন। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেও আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন।

অবশেষে হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়া মনির আহমেদকে শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতারে অভিযানে নামেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা একজন সাধারণ কৃষক সেজে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন।

মামলার অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।

বাংলা৭১নিউজ/এমএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com