নেতার মুক্তির খবরে ঢাকায় ছুটে গেছেন নেত্রকোনা সদরসহ নির্বাচনী এলাকার (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরি) অন্তত ৩০ হাজার মানুষ।
ওই এলাকার বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তির খবরে নেত্রকোনা থেকে আড়াই শতাধিক বাস ও তিন শতাধিক মাইক্রোবাসে করে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে। এছাড়া পাবলিক পরিবহনে ঢাকায় পৌঁছেছে আরও লোকজন।
এর আগে সব মামলায় খালাস পান সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ১৭ বছর কারাবাসের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি কারাগার থেকে ছাড়া পেতে যাচ্ছেন।
এ খবরে বিএনপি নেতাকর্মী, স্বজন ও এলাকার মানুষের মাঝে আনন্দ-উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে। তার নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও ময়মনসিংহ, নেত্রকোনায় নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নেতার কারামুক্তিতে অন্তত ৩০ হাজার লোক ঢাকায় চলে গেছেন। কারা ফটক থেকে বাবরকে বরণ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে নেচে-গেয়ে বাদ্য বাজিয়ে উল্লাস করছেন।
লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের জনগণ তার মুক্তির জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে আছে। তিনিও জনগণের কাছে ফিরতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। তার মুক্তির মধ্যদিয়ে ভাটি বাংলা তথা বাংলাদেশের গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথ প্রশস্ত হবে।
এর আগে মঙ্গলবার চট্টগ্রামে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় খালাস পান বাবর। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ মাধ্যমে বাবর তার বিরুদ্ধে করা সব মামলা থেকে খালাস পেলেন।
কারা অধিদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক জান্নাত-উল-ফরহাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, হাইকোর্টের রায় চট্টগ্রাম আদালতে যাবে। তারপর লুৎফুজ্জামান বাবর যে কারাগারে বন্দি রয়েছেন সেখানে যাবে। আদেশের কপি পাওয়ার পর কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন তিনি।
কেন্দ্রীয় কারাগারের এক কর্মকর্তা বলেন, সব ঠিক থাকলে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাবর বৃহস্পতিবার দুপুরে মুক্তি পেতে পারেন।
২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর বিভিন্ন মামলায় দণ্ড হয় তার। এরমধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয় এবং একটিতে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকার পতনের পর এসব মামলার আপিল শুনানি শেষে একে একে খালাস পান বাবর।
এরমধ্যে গত বছরের ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় ৮ বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পান তিনি। ২১ আগস্টের মামলায়ও বাবরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারক আদালত।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ