গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চারদিনই দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। ফলে সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে এক সপ্তাহেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন চার হাজার কোটি টাকার ওপরে কমে গেছে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৪ হাজার ৩২ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে তার তিনগুণের বেশি। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মাত্র ৪১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭১টির। আর ১৭৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৭৫ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১৫ শতাংশ। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৩০ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৩২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫৩ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ২৭ শতাংশ।
প্রধান ও ডিএসই-৩০ মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ১২ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ২৩ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৬৫ শতাংশ।
সবকয়টি সূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে গড় লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১৬০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ২০৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৮০১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৪ হাজার ৮৩২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৯৬৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা বা ২০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। মোট লেনদেন বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে শেয়ারবাজারে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
সবশেষ সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবথেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৮৬ কোটি ৪১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৪৮ কোটি ৯৪ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। ৩৩৫ কোটি ৫০ লাখ ২৩ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইস, জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, কেডিএস এক্সসরিজ এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ