বাংলা৭১নিউজ, মনিরুল ইসলাম দুলু, মংলা প্রতিনিধি : মংলার সুন্দরবন সংলগ্ন বৈদ্যমারীসহ আশপাশের এলাকায় বাঘের উপদ্রব শুরু হয়েছে। বাঘ আতংকে এলাকাবাসি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। খুব প্রয়োজন না পড়লে লোকজন ঘরের বাইরে তেমন একটা বের হচ্ছে না। ইতিমধ্যে বাঘের আক্রমণে একটি গাভি ও তার পেটের বাচ্চা মারা গেছে। এ ছাড়া বাঘের তাড়া খেয়ে বনের ভিতর থেকে একটি হরিণ লোকালয়ে চলে এসেছিল। পরবর্তিতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় হরিণটিকে লোকালয় থেকে উদ্ধার করে বন বিভাগের লোকেরা বনে ছেড়ে দেয়। বন বিভাগের পক্ষ থেকে স্থানীয় লোকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, গত সপ্তাহ খানেক ধরে সুন্দরবন লাগোয়া বৈদ্যমারীসহ আশপাশের এলাকায় বাঘের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। পার্শবর্তি বনের ভিতর থেকে দু’টি বাঘ লোকালয়ে এসে প্রায়ই হানা দিচ্ছে। শীত মৌসুমে খড়মা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় ক্ষুধার্ত দু’টি বাঘ গ্রামে প্রবেশ করে গরু মহিষসহ গবাদী পশুর উপর হামলা চালাচ্ছে। এতে করে এলাকাবাসী বাঘ আতংকে ভুগছেন। খুব প্রয়োজন না হলে বাঘের ভয়ে লোকজন খুব একটা বাইরে বের হচ্ছে না।
গত বৃহস্পতিবার বৈদ্যমারী গ্রামের মমিন উদ্দিন মুন্সীর গোয়ালের একটি গাভি সুন্দরবনে প্রবেশ করে। একটি বাঘ হামলা চালিয়ে গাভীর পেছনের অংশ থেকে ১০ থেকে ১২ কেজি মাংস খেয়ে ফেলে। এ সময় লোকজন আসার আগেই বাঘটি বনের ভেতরে চলে যায়। বন বিভাগের সহায়তায় স্থানীয় লোকজন গাভিটিকে উদ্ধার করে মাটি চাপা দেয়।
গাভির মালিক মমিন উদ্দিন মুন্সী বলেন, বাঘটি গাভির পেছনের দিক থেকে খেয়ে ফেলেছে। এ কারণে গাভির পেটে থাকা বাচ্চার দুটি পা বেরিয়ে এসেছে। বাঘের আক্রমণে গাভি ও বাচ্চা উভয়ই হারাতে হয়েছে। এর আগে গত বুধবার বিকেলে একই এলাকায় বাঘের তাড়া খেয়ে একটি হরিণ লোকালয়ে চলে আসে। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় হরিণটিকে উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় হরিণটিকে অক্ষত অবস্থায় বনে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বন বিভাগের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, সুন্দরবনে অনাধিকার গরু প্রবেশ করিয়ে গোচারণ করানোর অভিযোগে গাভির মালিকের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা করা হয়েছে। ভবিষ্যৎতে যাতে কারো গবাদি পশু বনে প্রবেশ না করে সেজন্য সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। এ ছাড়া কয়েকদিন ধরে বাঘের আনাগোনা বৈদ্যমারী এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে বনের আশপাশের লোকজনকে সচেতনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কামরুল হাসান আরো বলেন, বাঘের আনাগোনাটা একটা ভালো দিক। কারণ বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিই এর লক্ষণ। সুতরাং বাঘ আমাদের প্রয়োজন আছে। বাঘের এবং সাধারণ মানুষের জানমালের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচেষ্ট রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস