বাংলা৭১নিউজ,জামাল হোসেন বাপ্পা,বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীতে যাত্রীবাহি ট্রলার ডুবিতে তিন উপজেলার ১৯ জনের প্রাণহাণির এক বছর পূর্তি আজ। গত বছরের ২৮ মার্চ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মোরেলগঞ্জ ছোলমবাড়িয়া বাসষ্টান্ড খেয়াঘাট থেকে যাত্রীবহনকারী একটি ট্রলার পানগুছি নদীর অপর পাড় পুরান থানার খেয়াঘাটের প্রায় কাছাকাছি পৌছায় এসময় নৌবাহিনীর একটি জাহাজ (পি-৩১২) দ্রুতগতিতে মংলার দিকে চালিয়ে গেলে এর তুফানের তোড়ে ট্রলারটি উল্টে ডুবে এ দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রীবাহী খেয়া ট্রলারটি ডুবে ৫ শিশু, ৯ নারী ও ৫ জন পুরুষ লোকের সলিল সমাধি হয়। ট্রলারে ৮০জন যাত্রী ছিলো।
ওই দিন সময় বাড়ার সাথে সাথে নিহতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেই সাথে পানগুছি নদীর দু’পাড়ে স্বজন হারানো মানুষের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে সেখানকার পরিবেশ। স্বজন হারানো মানুষ গুলো খুজে ফিরছে নিহত স্বজননের মৃত দেহটি। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন ও মোরেলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১৫ জন নারী ও ৮ জন শিশুসহ ৫১ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। নিখোঁজ থাকেন ১৯ জন। নিখোঁজদের সন্ধানে নৌবাহিনীর ৩টি, ফায়ার সার্ভিসের ৪টি, কোস্টগার্ডের ২টি ও পুলিশের দুটি দল অংশ নেয়। টানা ৪ দিন উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ৪ শিশু, ৯ নারী ও ৫ জন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়। আজও নিখোঁজ রয়েছেন কাঁচিকাটা গ্রামের নাছির শেখের ছেলে নাজমুল হাসান(৬)।
বর্তমান মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, নিহতদের পরিবারকে ওই সময় সরকারিভাবে ৪৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও নিহতদের স্মরণে নাম ফলকসহ একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির কাজ চলছে। এ ছাড়া ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগও নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
ট্রলার ডুবির চারদিন পর ০১ এপ্রিল দুপুরে মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাটে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওবায়দুর রহমান সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যেমে এ অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে ইউএনও মো. ওবায়দুর রহমান জানান, ট্রলার ডুবির পর নিখোঁজদের উদ্ধারে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস পাঁচ দিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এছাড়াও স্থানীয়রাও এ কাজে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছেন। ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ যে দুই শিশুকে এখনো পাওয়া যায়নি তাদের উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করবে। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ এবং ঘাট মালিকদের অব্যবস্থাপনার কারণে এ ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- ফায়ার সার্ভিসের বাগেরহাট কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক সরদার মাসুদুর রহমান, কোস্টগার্ড কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম, মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল আলমসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস