বাংলা৭১নিউজ, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফলে পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করার অজুহাত তুলে এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রলীগের দুই নেতা। এ ঘটনায় পুলিশ বগা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফ আহমেদকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার দুপুরে বাউফলের বগা ডা. ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রী কলেজ  কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাগেছে, বগা কেন্দ্রের ডা. ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রী কলেজ ভেণ্যুর ৬ নং  কক্ষে নকল করার সময় হাতেনাতে ধরা পরে সাগর মন্ডল নামের এক শিক্ষার্থী। পরে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মনিরুজ্জামান ওই পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগ মুহুর্তে বহিস্কারের খবর পেয়ে বগা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফ আহমেদ ও  কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম সিকদার কেন্দ্রে প্রবেশ করে শিক্ষকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেয়া শুরু করেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর  ৫নং কক্ষ  থেকে  হোসনে আরা পারভীন নামের এক শিক্ষক উত্তরপত্র নিয়ে অফিস কক্ষে যাওয়ার পথে তাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি ও চর থাপ্পর মেরে আহত করেন ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ ও ইব্রাহিম। লাঞ্ছিত শিক্ষক হোসনে আরা কারখানা সুফিয়া খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  শিক্ষক।

কয়েকদিন আগে তার স্বামী পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জাফরকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাদিকুর রহমান টিপু  মারধর করেন। শিক্ষক  হোসনে আরা পারভীন সাংবাদিকদের বলেন, আমি ৫ নং  কক্ষের দায়িত্বে ছিলাম। বহিস্কার করা হয়েছে ৬ নং কক্ষের পরীক্ষার্থীকে।  বহিস্কার সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। পরীক্ষা  শেষ হওয়ার পর আমি ৬৫টি উত্তরপত্র নিয়ে অফিসের দিকে রওয়ানা হই। কক্ষ  থেকে  বের হওয়ার  সঙ্গে সঙ্গে আশরাফ ও ইব্রাহিম আমাকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকে ‘তোর কারনে সাগর বহিস্কার হল’।

একপর্যায়ে অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়ে তারা আমাকে মারধর করে। ঘটনার সময় অন্য শিক্ষকরা এসে আমাকে উদ্ধার করেন। তিনি বলেন, আমার স্বামীকে যারা মেরেছে তারাই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার উপর হামলা করতে পারে বলে ধারনা করছি।

পরে পরীক্ষা  কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ ছাত্রলীগ নেতা আশরাফকে আটক করে।

এ ঘটনায় বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা  কেন্দ্রে প্রবেশ করে শিক্ষককে মারধর করার অপরাধে আশরাফকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এ ব্যপারে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, কেন্দ্রে ৫নং কক্ষ দায়িত্বে থাকা একজন শিক্ষক ও লাঞ্ছিত হোসনেয়া বেগমকে ডেকে এনে সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরে বাউফল থানা ওসিকে মামলা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস