পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধায় নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কয়ার’। টুইন টাওয়ার কিংবা লন্ডন ব্রিজের আদলে স্থাপনাটির মহাসড়কের দুই পাশে থাকবে পাঁচতলার দুটি ভবন। ভবন দুটি যুক্ত হবে একটি সেতুর মাধ্যমে। সম্পূর্ণ স্থাপনা হবে স্টিল স্ট্রাকচারের। নান্দনিক এই স্থাপনা নির্মাণ করছে পঞ্চগড় জেলা পরিষদ। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৭০ হাজার টাকা। দেশের উত্তর অংশকে আরো পর্যটনবান্ধব করতে এই উদ্যোগ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, প্রতিবছর পঞ্চগড়ে প্রায় ৫০ হাজার পর্যটকের আনাগোনা হলেও তেমন অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা গড়ে ওঠেনি। তাই জেলা পরিষদ থেকে দেশের উত্তরের শেষ সীমানা বাংলাবান্ধা এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কয়ার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই মধ্যে স্থাপনার কাজও শুরু হয়েছে। শিগগিরই বাংলাবান্ধার বুকে দৃশ্যমান হবে স্থাপনাটির পুরো অবয়ব।
পঞ্চগড় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী আব্দুল আলীম খান ওয়ারেশী জানান, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের কাছেই মহাসড়কের দুই পাশে স্টিল স্ট্রাকচারের দুটি পাঁচতলা ভবন নির্মিত হবে। প্রতিটি ভবনের দৈর্ঘ্য হবে ৩০ ফুট এবং প্রস্থ ৩০ ফুট। প্রথম ভবনের নিচতলায় থাকবে ঐতিহাসিক জাদুঘর। সরকারের উচ্চমহলের অনুমতি নিয়ে সেখানে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিসহ ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সম্পাদিত সকল চুক্তির চিত্র এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসংক্রান্ত তথ্যচিত্র রাখার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ তলায় থাকবে আবাসিক সুবিধা। পঞ্চম তলায় থাকবে ওয়াচ টাওয়ার ও কফি কর্নার।
দ্বিতীয় ভবনের নিচতলায় থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও সিকিউরিটি ইউনিট। দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ তলায় থাকবে আবাসিক সুবিধা। পঞ্চম তলায় হবে ওয়াচ টাওয়ার ও খাবার হোটেল। দুটি ভবনকে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের একটি সেতু সংযোগ স্থাপন করবে। সেতুটি নির্মিত হবে মাটি থেকে ২৫ ফুট ওপরে। সেতুটির মাঝ বরাবর ৫ ফুট চওড়া একটি রাস্তা রেখে দুই পাশে থাকবে দেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর স্টল। সরকারের অনুমোদন পেলে বাংলাদেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের স্টলও রাখার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। বাংলাবান্ধায় দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কয়ার নির্মিত হলে পর্যটনশিল্পে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। পর্যটকদের থাকা-খাওয়াসহ বিনোদনের সুযোগ তৈরি হবে।
পঞ্চগড় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক পঞ্চগড়ে ঘুরতে আসেন। বিশেষ করে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট দেখতে যান তারা। কিন্তু সেখানে থাকা-খাওয়ার তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই্। পঞ্চগড়ের পর্যটনশিল্পকে আরো এগিয়ে নিতেই আমরা জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কয়ার’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, এটি নির্মিত হলে পঞ্চগড়ের পর্যটনশিল্পে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এমএন