বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: বাংলাদেশ ও ভারত তাদের অংশীদারিত্ব দৃঢ়করণে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটা দূরদর্শী রোডম্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।
বাংলাদেশের সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের উপস্থিতিতে এখানে অনুষ্ঠিত ৫ম ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।এই বৈঠকে তারা যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন।
এখানে প্রদত্ত যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত বিপুলসংখ্যক লোককে মানবিক সহায়তা দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে সুষমা স্বরাজ মোমেনকে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবর্তনে ভারতের অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বৈঠককালে উভয় পক্ষ ২০১৭ সালের অক্টোবরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জেসিসি’র সর্বশেষ বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়নসহ চলমান সহযোগিতার বিষয়ে পর্যালোচনা করে।
দুই মন্ত্রী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালের কৌশলগত অংশীদারিত্ব পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বর্তমানে এই সম্পর্কের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত গুরুত্ব এবং গণতন্ত্র ধর্ম নিরপেক্ষতা, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব ও অন্যান্য অনেক বিষয়ে মিল থাকার কথা উল্লেখ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি যৌথ নদীর পানি বণ্টন, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, পরিবহন ও যোগাযোগ, সংস্কৃতি এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগসহ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে দুইটি দেশ অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
তারা মহাকাশ, পারমাণবিক জ্বালানি, তথ্য প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্সের মতো নতুন ও উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বর্তমানে বিস্তৃত হওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানান।
দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অংশীদারিত্বকে অপরিবর্তনীয় করার লক্ষ্যে একটি দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রোডম্যাপ প্রণয়নের জন্য তারা এসময় উপস্থিত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। বিশেষত তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বিষয়টিকে অংশীদারিত্ব গঠনের ক্ষেত্রে গূরুত্ব দেওয়ার আকাক্সক্ষা প্রকাশ করেন।
পরে, দুইদেশের মধ্যে বিদ্যমান বহুমুখী সহযোগিতাকে জোরদার করার লক্ষ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হয়।
চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) হলো: বাংলাদেশের একহাজার আটশজন মধ্যম পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ, মেডিসিন প্ল্যান্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও ভারতের ‘আয়ুস’-এর মধ্যে সহযোগিতা, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই)-এর মধ্যে সহযোগিতা এবং বাগেরহাটের মংলায় ভারতীয় অর্থনৈতিক এলাকায় বিনিয়োগের লক্ষ্যে হিরানান্দানি গ্রুপ ও বাংলাদেশের বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতা।
বাংলা৭১নিউজ/একে