বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক (ইডি) মো. শাহ আলমের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এস কে সুর চৌধুরীর স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী এবং মো. শাহ আলমের দুই স্ত্রী শাহীন আক্তার শেলী ও নাসরিন বেগমের ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছে।
এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে সব ধরনের লেনদেনের তথ্য পাঠাতে বলেছে। একই সঙ্গে আগেই বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যাংক হিসাবের তথ্যও চেয়েছে এনবিআর।
চিঠিতে বলা হয়, এসব করদাতা ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্য—স্ত্রী-সন্তানের একক বা যৌথ নামে অথবা তাঁদের আংশিক মালিকানাধীন অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের নামে আপনার প্রতিষ্ঠানে বা ব্যাংকে পরিচালিত যেকোনো মেয়াদি আমানত হিসাব (এফডিআর হিসাবসহ যেকোনো ধরনের বা নামের মেয়াদি আমানত হিসাব), যেকোনো ধরনের বা মেয়াদের সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব (মঞ্জুরিপত্রের কপিসহ), ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড, লকার বা ভল্ট, সঞ্চয়পত্র বা অন্য যেকোনো ধরনের সেভিংস পেমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট স্কিম বা ডিপোজিট স্কিম, শেয়ার হিসাব (বিও অ্যাকাউন্ট) বা অন্য যেকোনো ধরনের বা নামের হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে উক্ত হিসাবগুলো ১ জুলাই ২০১৩ থেকে হালনাগাদ হিসাব বিবরণী এই পত্রপ্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে পাঠানোর অনুরোধ করা হলো। আগে ছিল কিন্তু বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে—এমন হিসাবের তথ্যও প্রদান করতে হবে।
জানা গেছে, পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের মতো একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমের বিরুদ্ধে ওই চক্রকে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ঘুষের বিনিময়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের তথ্য চাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় ঘুষ কেলেঙ্কারির স্বীকারোক্তিও দেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান। তাঁদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরাও। এরই মধ্যে বিষয়টি তদন্তে উচ্চ পর্যায়ে কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে সরিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলা৭১নিউজ/এমএস