বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আরও এক বার দল ও রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নয়াদিল্লিতে আসীন কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিতভাবে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি এ ইস্যুতে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা শুরুর জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে আহ্বানও জানিয়েছেন মমতা।
সোমবার দুপুরে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই, রাষ্ট্রপুঞ্জের (জাতিসংঘের) সঙ্গে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কথা বলুক যেন তারা সেখানে শান্তিরক্ষী সেনাদের পাঠাতে পারে। আমাদের অনুরোধ রইল।”
সেই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষার ব্যাপারটি কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন বলেও মন্তব্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের বিবৃতিও দাবি করেছেন তিনি।
“বর্ডার সিকিউরিটি কেন্দ্রের আওতায়। এটি আমাদের এক্তিয়ার বা দায়িত্বে নেই। আমরা বিধানসভার পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাচ্ছি—প্রধানমন্ত্রী যেন সংসদে বাংলাদেশের বিষয়ে কথা বলেন। যদি প্রধানমন্ত্রীর অসুবিধা থাকে কোনও ব্যাপারে, তাহলে বিদেশমন্ত্রী (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) যেন সংসদে বিবৃতি দিয়ে জানান যে কেন্দ্র এই বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
বাংলাদেশে ভারতীয়রা আক্রান্ত হলে তার সরকার তা সহ্য করবে না বলে নিজ বক্তব্যে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভার অধিবেশনে তিনি বলেন, “যদি বাংলাদেশে ভারতীয়রা আক্রান্ত হন, তবে আমরা তা সহ্য করব না। আমরা তাদের সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে পারি।”
এই প্রসঙ্গেই তার সংযোজন, “আমাদের পরিবার, সম্পত্তি এবং প্রিয় মানুষেরা বাংলাদেশে আছেন। ভারত সরকার এই বিষয়ে (বাংলাদেশ) যে অবস্থান নেবে, আমরা তা গ্রহণ করব; কিন্তু বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ধর্মীয় কারণে কেউ অত্যাচারিত হলে আমরা তার নিন্দা জানাই। আমরা এ ব্যাপারে ভারত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার চুপ করে রয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে বিজেপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আমি গত ১০ দিন ধরে দেখছি কেন্দ্রীয় সরকার চুপ করে রয়েছে। অথচ তাদের দল বলছে সব আটকে দেবো।”
মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানান, ওয়াকফ বিল নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার পর যে লিখিত প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে যাবে, তার সঙ্গে থাকবে জাতিসংঘের শান্তিবাহিনী পাঠানো সংক্রান্ত প্রস্তাবটিও।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মমতা বলেছিলেন, বাংলাদেশ নিয়ে দেশের সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তিনি তার সঙ্গে আছেন। তার আগের দিন বুধবার ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভার অধিবেশেনের ফাঁকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রায় একই কথা বলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং এমপি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।বাংলাদেশের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ