বাংলাদেশও সবাইকে ভিসা দেয় না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের (বিএজেএফ) প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
মার্কিন ভিসানীতির পরিপ্রেক্ষিতে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ভিসা তো যার যার দেশের, তার একটা নিয়ম আছে। বাংলাদেশও সবাইকে ভিসা দেয় না, সেটা সমৃদ্ধশালী দেশের হোক, কিংবা পশ্চিমা কোনো দেশের হোক।
এসময় তিনি জানান, দেশের বাজার অস্থিতিশীল করতে ব্যবসায়ীরা ‘সিন্ডিকেট’ করছেন।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঘুসখোর, পাচারকারী, মুনাফাখোর এরা হলো দুর্বৃত্ত। এগুলো এক ধরনের দস্যুতা। এরা দেশের শত্রু। দেশ গোল্লায় গেলেও এরা কিছু ভাবেন না। এ ধরনের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কঠোর। তাদের দমন করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
তিনি বলেন, শিক্ষা, গবেষণা ও আধুনিকতার সঙ্গে মিলিয়ে কৃষি কোথায় নিয়ে যেতে হবে, সেই পরিকল্পনা থাকতে হবে। যদি বলি বাংলাদেশের অর্থনীতি ও কৃষি ব্যর্থ হয়েছে, এটা ঠিক হবে না। সাড়ে সাত কোটি মানুষের দেশেও কিন্তু অভাব ছিল। দুর্ভিক্ষ হানা দিয়েছিল। এখন বাংলাদেশ এমন অবস্থায় এসেছে যে, বলতে পারি আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
কৃষিখাতে কি ধরনের সংকট রয়েছে তা তুলে ধরতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানান বাহাউদ্দিন নাছিম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষকরা সারের ন্যায্য দামের জন্য জীবন দিয়েছেন। অধিকার অর্জনে জীবন দিয়েছেন। একবার নয়, একাধিকবার। এই কৃষির জন্য সরকার চাইলে পাশে দাঁড়াতে পারে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ভর্তুকির জায়গাটা ধরে রেখেছেন। কৃষি নিয়ে যারা রাজনীতি করেন, তাদের অর্জন টেকসই হবে না।
আওয়ামী লীগ দেশের কৃষকদের জন্য অন্তপ্রাণ। আমাদের দেশের মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য নিরাপত্তায় আমরা কাজ করি। ‘বাংলাদেশ ভয়াবহ খাদ্য সংকটে পড়ছে’- এমন আতঙ্ক মানুষের মাঝে ছড়ানো হয়েছিল। তাতে লাভ হয়নি। বাংলাদেশ খাদ্য সংকটে পড়বে না।
‘রিপোর্টিং অন এগ্রিকালচার ট্রান্সফরমেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করে বিএজেএফ। সংগঠনের সভাপতি গোলাম ইফতেখার মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনার সঞ্চালনা করেন বিএজেএফের সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান ও এনআরবিসি ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশনের প্রধান মো. হারুন অর রশিদ। দেশের কৃষি সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ৬০ জন গণমাধ্যম কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষি আমাদের দেশে অনেক সমৃদ্ধি এনেছে। তারপরও কৃষি কাজে নিয়োজিত অনেকেই অবহেলিত। দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত। বাকিরা অন্য পেশায়।
কিন্তু আমাদের মোট আয়ের মাত্র ১২ শতাংশ পায় ৪২ শতাংশ মানুষ। বাকি ৮৮ শতাংশ অন্য খাতের লোকজনের কাছে যায়। এই হিসাব থেকেই বোঝা যায়, কৃষি খাতের মানুষের আয় কম ও অবহেলিত। আমরা যে বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখছি এটা কৃষিতে আনতে পারছি না।
বিএজেএফ সভাপতি গোলাম ইফতেখার মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে কৃষকদের অর্ধেকের বেশিই তরুণ। কিন্তু আমাদের যারা উচ্চশিক্ষিত তারা কৃষিতে বিনিয়োগ করছেন না। দেশের কৃষিতে যে রূপান্তর ঘটছে, আমাদের সাংবাদিকতায়ও তার প্রতিফলন থাকতে হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে