বাংলা৭১নিউজ,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রাউতারায় গত শনিবার একটি রিং বাঁধের দুই স্থান কেটে দিয়েছেন স্থানীয় মত্স্যজীবী ও মাঝিরা। এতে বাঁধের কাটা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে গত দুদিনে শাহজাদপুরের তিনটি ইউনিয়নসহ চলনবিলের নয় উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় প্লাবন দেখা দিয়েছে। প্লাবিত উপজেলাগুলো হলো- শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ, পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও ফরিদপুর এবং নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া ও বড়াইগ্রাম।
গত শনিবার বাঁধ কেটে দেয়ার পরই পানি প্রবেশ করতে থাকে। গত বোরবার বৃদ্ধি পায় পানির পরিমাণ। আজ পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। ডুবে গেছে অনেক কাঁচা রাস্তা। কৃষকরা বাথান থেকে তাদের গবাদিপশু বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। সর্বোপরি পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এ অঞ্চলের প্রায় দুই লাখ মানুষ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, এক মাস আগে ১ কোটি ৫১ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে শাহজাদপুরের পোতাজিয়া ইউনিয়নের রাউতারা স্লুইস গেটসংলগ্ন ১ হাজার ২০০ মিটার রিং বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। প্রতি বছরের মতো এবারো এটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল বন্যার হাত থেকে এ অঞ্চলের কৃষকদের জমির পাকা ধান রক্ষা করা। তবে এ বছর বন্যা দেরিতে আসায় কৃষকরা আগেই ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। তারপরও এ বাঁধ নির্মাণ করে পাউবো কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানায়, ১৯৯৪ সালের পর থেকে এ অঞ্চলে ধান ঘরে তোলার পরই বন্যার পানি বৃদ্ধি পায়। এতে কোনো ফসলহানি হয় না। তারপরও সিরাজগঞ্জ পাউবো ফসল রক্ষার নামে বাঁধ নির্মাণ করে। প্রতি বছরই একপর্যায়ে মত্স্যজীবী ও মাঝিরা অবাধ চলাচলের সুবিধার্থে এ বাঁধ কেটে দেন।
এদিকে পোতাজিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী ব্যাপারী জানান, এ বাঁধ নির্মাণের ফলে অঞ্চলটিতে প্রতি বছরই বিস্তীর্ণ জলাশয়ে দেরিতে পানি আসে। এতে মত্স্যজীবীরা আশানুরূপ মাছ না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন। অন্যদিকে এ এলাকায় বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া চলাচল সম্ভব হয় না। বাঁধের কারণে এ দুই ক্ষেত্রেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। যে কারণে ধান কাটা শেষ হলেই এ বাঁধ কেটে দেয় স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে কথা হলে সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চলনবিল অঞ্চলে বন্যা মৌসুম শুরুর প্রথম দিকে ফসল রক্ষায় পাবনার ভাঙ্গুরা ও শাহজাদপুরের তিনটি পয়েন্টে স্বল্প উচ্চতাসম্পন্ন ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পানি বৃদ্ধি পেলে সাধারণত এসব বাঁধ ডুবে যায়। তখন এর ওপর দিয়ে নৌকা চলাচলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
তিনি আরো জানান, পোতাজিয়া এলাকায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও বাঁধ নির্মাণসহ মেগা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে আর সমস্যা থাকবে না।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ