বাংলা৭১নিউজ, আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে : এতিম শিশুদের দিয়ে বিকৃত যৌন নিপীড়ন করা ঠিকমত খাদ্য না দেওয়া, শিশুদের দিয়ে গা হাত পা টিপানো ও অসুস্থ হলে চিকিৎসা না করানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবারের ৭২ জন শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে হামলা চালিয়ে শিশু পরিবারের চার কর্মকর্তা কমচারিকে পিটিয়ে আহত করেছে। শিশু শিক্ষাথীরা অভিযোগ করে বলেন, তাদেরকে দিয়ে প্রতিনিয়ত বলাৎকার করানো হয়। ঘটনার পর একজনকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বদলি করে দিয়েছেন। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসক তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন।
সাতক্ষীরা সদরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকায় ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি শিশু পরিবারে (বালক) এখন বাস করে ৭২ জন এতিম শিশু। তাদের দেখভাল করার জন্য শিক্ষক কর্মচারিসহ ১৭ টি পদের মধ্যে রয়েছে ৯ জন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ খাওয়া দাওয়া পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, চিকিৎসা কোনো বিষয়ে সুবিধা নেই তাদের। এ সব বিষয় নিয়ে অভিযোগ করলেই তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। শিশু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ চারজন কর্মচারি তাদের ওপর সুযোগ বুঝে বিভিন্ন সময়ে যৌন নির্যাতন চালায়। এর প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো লাভ হয় না বলে জানায় তারা। রোববার বলাৎকার চালানোয় শিক্ষার্থীরা চার অভিযুক্তদের গনপিটুনি দিয়েছে।
সরকারি শিশু পরিবারে শিক্ষার্থী সাকিব, আহসান হাবিব, আবদুর রহিম , মো. ইব্রাহীম হোসেন, আজমল হোসেন জানায়, ‘আমরা তাদের বলাৎকারের শিকার। আমরা সব শিক্ষকদের অপসারন চাই’। তারা বলাৎকারের অভিযোগ আনে শিশু পরিবারের কর্মচারি বিমান বৈরাগী, তানভির হোসেন, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, কৌশিক ফরহানের বিরুদ্ধে। রোববার রাতে তাদেরকে গনপিটুনি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, অভিযোগ করলেই উল্টো মার হয় আমাদের। রোববার রাতে আমরা তাদের পিটিয়েছি।
তবে অভিযুক্ত চার কর্মচারি জানান আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। শিশুরা শৃংখলা ভঙ্গ করলে আমরা কঠোর হতেই তারা এসব অভিযোগ দেয়।
শিশু পরিবারের উপ তত্ত্বাবধায়ক মো. মিজানুর রহমান জানান ‘আমি এখানে মাত্র তিনদিন যোগদান করেছি। শিশুদের অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
জেলা সমাজ সেবা উপপরিচালক দেবাশীষ সরদার বলেন অভিযোগ পাবার পরপরই কর্মচারি বিমান বৈরাগীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহমেদ জানান, ঘটনাস্থলে সদরের ভারপ্রাপ্ত ইউএন ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদশর্ন করেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা যতদূর জেনেছি শিশু পরিবারের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিশুদের নির্যাতন, গা-হাত-পা টিপিয়ে নেয়ার অভিযোগে শিশুরা এমনটি করেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, শিশু পরিবারের ঘটনাটি নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহমেদ স্বজলকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দিলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসক জানান।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস