বরগুনার আমতলীতে সেতু ভেঙে নিহত ৯ জনের মধ্যে ৭ জনের মরদেহ মাদারীপুরে দাফন হয়েছে। রোববার (২৩ জুন) সকালে মাদারীপুরের শিবচরের ভদ্রাসনে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে রাত তিনটার দিকে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়, স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একসঙ্গে একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু। এ শোক কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। শনিবার রাত তিনটার দিকে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের শিবচরে পৌঁছায় দুর্ঘটনায় নিহত ৭ জনের মরদেহ। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। জড়ো হন প্রতিবেশীরাও। পরে রোববার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
আরও জানা যায়, বরগুনার আমতলীতে বোনের মেয়ে হুমায়রা আক্তারের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বুধবার ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে মাদারীপুরের শিবচরের ভদ্রাসনের গ্রামের বাড়িতে যান ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। পরে পরিবারের আরও সদস্যরাসহ বিয়ের অনুষ্ঠানে বরগুনা যান আবুল কালাম আজাদ (কালাম মাদবর)।
মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে গেলেও প্রাণ হারান তার স্ত্রী শাহানাজ আক্তার মুন্নী ও দুই মেয়ে তাহিদা ও তাসদিয়া। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় ব্যাংক কর্মকর্তার বোন, ভাবিসহ পরিবারের ৭ জনকে। এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা।
জানা যায়, বরগুনার আমতলীর কাউনিয়ার মনিরুল ইসলামের মেয়ে হুমায়রার সঙ্গে একই এলাকার সেলিম ইসলামের ছেলে সোহাগের বিয়ে শুক্রবার দুপুরে সম্পন্ন হয়। শনিবার দুপুরে কনেপক্ষ আত্মীয়-স্বজন নিয়ে বরের বাড়িতে যাওয়ার সময় বহনকারী মাইক্রোবাসটি লোহার সেতু ভেঙে পানিতে ডুবে যায়। এ ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ৭ জনই মাদারীপুরের।
নিহতরা হলেন- মাদারীপুর শিবচরের ভদ্রাসন গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী শাহানাজ আক্তার মুন্নী (৪০) ও তার দুই মেয়ে তাহিদা (০৭) ও তাসদিয়া (১১), ব্যাংক কর্মকর্তার বোন একই এলাকার মৃত ফকরুল আহম্মেদের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০), নিহত ফরিদা বেগমের ছেলে সোহেল খানের স্ত্রী রাইতি আক্তার (৩০), ব্যাংক কর্মকর্তার ভাই বাবুল মাদবরের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪০) ও রফিকুল ইসলামের স্ত্রী রুমি বেগম (৪৫)।
মাদারীপুরের শিবচরের ভদ্রাসন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বেপারী বলেন, একটি পরিাবরের ৭ জন একসঙ্গে মারা যাওয়ায় পুরো ইউনিয়নজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের পরিবারকে শান্ত্বনা দেয়ারও ভাষা নেই। কিভাবে এই শোক মেনে নিবে, সেটাই বুঝতে পারছি না। তবুও এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদ সব সময় এই পরিবারটি পাশে থাকবে, সেই প্রত্যাশা করছি।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, নিহতদের মধ্যে ৭ জনই মাদারীপুরের। এটি খুবই দুঃখজনক। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে একসঙ্গে একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। ওই পরিবারের পাশে থাকবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ