বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু আজ মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন চালু হবে এ মাসেই সাবেক সেনা সদস্য হত্যায় ৯ জনের যাবজ্জীবন ইতা‌লি ভিসাপ্রার্থীদের যে বার্তা দি‌লেন পররাষ্ট্র উপ‌দেষ্টা ময়মনসিংহে ‘চাঁদাবাজ’ রানাসহ ৬ আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার নিরাপদ খাদ্য পেতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমাতে হবে ছয়দিন বন্ধ থাকবে সোনামসজিদ স্থলবন্দর টি-টোয়েন্টি থেকে মাহমুদউল্লাহর অবসর ঘোষণা শেখ হাসিনা কোথায় আছেন, জানালেন ছেলে জয় সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলসহ ৪ জনের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু পিএসসির চেয়ারম্যানসহ সব সদস্যের পদত্যাগ জামিন পেলেন সাবের হোসেন চৌধুরী, কারামুক্তিতে বাধা নেই বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষিত দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: মিলার সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে: ড. ইফতেখারুজ্জামান শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসারদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স শুরু দুর্গাপূজার ছুটি বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন মন্ত্রী-এমপিরা কার ইঙ্গিতে পালালো তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন: ফারুক মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনেই চলবে হেলিকপ্টার! তাপসী তাবাসসুমকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ নেত্রকোণায় লাখ মানুষ পানিবন্দি, এক মৃত্যু

বন্যায় প্লাবিত দেড় শতাধিক স্কুল, ক্লাসে ফেরা নিয়ে শঙ্কা

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

স্কুল খুলছে এমন খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার বিয়ারা ঘাট এলাকার চরসাপড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আকাশ শেখ এসেছিলেন তার স্কুলটি দেখতে। সঙ্গে ছিল তার দুই সহপাঠী সিরাতুল মুস্তাকিম জিহাদ আর মো. আকাশ। নৌকায় করে স্কুল দেখতে এসে হতবাক তারা। স্কুলের চাল সমান পানি উঠেছে। সদ্য পানি থেকে জেগে ওঠা স্কুল ঘরের টিনের চালে বসে আংশিক ডুবে থাকা স্কুলের সাইনবোর্ডের দিকে খানিকক্ষণ নিষ্পলক তাকিয়ে থাকে আকাশ। এ সময় সঙ্গে থাকা তার দুই সহপাঠী বলে ওঠে, ‘হয়তো স্কুল এবারেও খুলবেনা।’

একই অবস্থা জেলার শতাধিক বিদ্যালয়ের। সিরাজগঞ্জে যমুনা, ইছামতি ও ফুলজোড় নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ, শ্রেণিকক্ষ আর রাস্তাঘাট এখনও পানির নিচে সেসব বিদ্যলয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভেতরে-বাইরের ঝোপঝাড়, বাথরুম, জানালা, দরজা মেরামত, রঙের কাজ করাসহ আসবাবপত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের নতুন করে বরণ করে নিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো প্রস্তুত হচ্ছিলো। বিদ্যালয় খোলার আনন্দে শিশুরাও হয়ে ওঠেছে প্রাণচঞ্চল। তবে যেসব বিদ্যালয় এখনো পানিবন্দি আছে সেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আনন্দে ভাটা পড়েছে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা পারপাচিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের চারপাশ পানি থইথই করছে। স্কুলে যাতায়াতের রাস্তাটি হাঁটু পানির নিচে। আর বিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকেছে। বেঞ্চগুলো রয়েছে পানির নিচে। সদর উপজেলার চরসাপড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও একই অবস্থা। যমুনার পানি কমলেও বিদ্যালয়ের অর্ধেক অংশই রয়েছে পানির নিচে।

 

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ২৫টি মাধ্যমিক, কারিগরি ও কলেজ এবং ১০৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার চর মালশাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রানীগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরসাপড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিস্তারিণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাজিপুর উপজেলার পলাশবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড়গাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নতুন মাইজবাড়ী সরাকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড়বাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১০৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে এখনো পানি রয়েছে। কিছু কিছু বিদ্যালয়ের পানি নেমে গেলেও যোগাযোগ রক্ষাকারী সড়ক, রাস্তাঘাট ও বসতবাড়িতে এখনো পানি থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের একটা অংশের ক্লাসে না ফেরার সংশয় রয়েছে।

জানা যায়, গত দুই বছরে চৌহালী উপজেলার রেহাইমৌশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারবয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরমাশুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ব্রিদাশুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় ২৫টি স্কুল যমুনাগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এবারের বন্যায় প্রায় সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে। নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন স্থানে পাঠদান কক্ষ নির্মাণ হয়েছে। তবে এ বছর বিলীন হয়ে যাওয়া স্কুলগুলোর টিন-কাঠসহ আসবাবপত্রের ঠাঁই হয়েছে কারও বাড়ির উঠান, খোলা মাঠে অথবা ওয়াপদা বাঁধে। এ কারণে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশে নিয়ে শঙ্কায় অভিভাবকরা।

 

বন্যা কবলিত ছোনগাছা পারপাচিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সালেহা খাতুন জানান, স্কুলের মাঠ থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও চারপাশ এখনও পানিবন্দি রয়েছে। কিন্তু এখানকার বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা নদী পার হয়ে স্কুলে আসে। এছাড়াও স্কুলে আসার যে রাস্তাটি রয়েছে তা এখনো পানির নিচে রয়েছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পানি নেমে যাবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তারপরেও স্কুল খোলার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চালুর জন্য সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে নদীতে বিলীন হওয়া স্কুলগুলো অন্যের বাড়ি অথবা খোলাস্থানে ঘর তুলে পাঠদানের ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। আর স্কুল খোলার বিষয়ে ঘোষণা আসার পর থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য উপযুক্ত করা হচ্ছে।

 

সিরাজগঞ্জ জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইমরান খন্দকার জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলায় বন্যা কবলিত ১০৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো নিয়েও কাজ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ায় অনেক বিদ্যালয় থেকে পানি নেমে গেছে। ১২ সেপ্টেম্বর শতভাগ স্কুল খোলা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম শফী উল্লাহ বলেন, জেলায় বন্যার কারণে ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার কারণে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব না হলে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হবে।

 

তিনি আরও বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আাগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠার চালুর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/পিকে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com