বাংলা৭১নিউজ,(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে দুই বন্ধু হানিফুর রহমান ও বিপ্লব চন্দ্র রায়কে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার একমাত্র আসামি তরিকুল ইসলাম (২৭)। দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান।
গ্রেফতার তরিকুল ইসলাম দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের গিয়াস উদ্দীনের ছেলে।
বীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিলা পারভীন জানান, গত ১৩ জুন (বৃহস্পতিবার) জোড়া খুনের একমাত্র আসামি তরিকুল ইসলামকে বীরগঞ্জের শালবাগান এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তরিকুল ইসলামের দেয়া তথ্য অনুয়ায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ঘোড়াঘাট উপজেলার একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম জানান, তরিকুল ইসলাম, হানিফুর রহমান ও বিল্পব চন্দ্র রায় তিন বন্ধু ছিলেন। তারা তিনজনই মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারী ছিলেন। হানিফুর তারিকুলের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় ১৮ হাজার টাকা ধার নেন। সেই টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা শুরু করেন হানিফুর। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ঘটনার আগের দিন হানিফুর ও বিল্পব মোটরসাইকেল যোগে বীরগঞ্জের ঝাড়বাড়ী বাজারে তরিকুলের সঙ্গে দেখা করতে যান। দেখা করে আলাপ-আলোচনার একপর্যায়ে তিন বন্ধু একই মোটরসাইকেলে নীলফামারীর দেবীগঞ্জ বাজারে যান। সেখানে দুই বন্ধুর অজান্তে তরিকুল দেবীগঞ্জ বাজারের কামারের দোকান থেকে একটি ধারালো চাকু কিনে নিজের কোমড়ে লুকিয়ে রাখেন।
সেখান থেকে আবার তিন বন্ধু একই মোটরসাইকেলে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। সেখান থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট ও দুটি ফেনসিডিলের বোতল ক্রয় করেন তারা। সেই ফেনসিডিল তিন বন্ধু মিলে সেবন করার পর আবার বীরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, বীরগঞ্জে পৌঁছানোর পর আবার তিন বন্ধু মিলে ইয়াবা সেবন করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তারা নিজ পাড়ার যদুর মোড়ের দিকে রওনা দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বেই চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে বসা তরিকুল ইসলাম কোমড় থেকে ধারালো চাকু নিয়ে প্রথমে বিপ্লব চন্দ্রের গলায় কয়েকটা টান মারেন এবং মোটরসাইকেল চালক হানিফুরকে মোটরসাইকেল স্লো করার কথা বলেই হানিফুরের গলায় চাকু দিয়ে কয়েকটি টান মারেন। এতে মোটরসাইকেলসহ তিনজনই পড়ে যান। বিপ্লব চন্দ্র রায় ও হানিফুর রহমান ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে মোটরসাইকেল নিয়ে তরিকুল পালিয়ে যান।
পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম বলেন, গ্রেফতারের পর তরিকুল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ মে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের ৬নং নিজপাড়া ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামের বালাপাড়ার যদুর মোড়ের যশো মোহাম্মদের বাড়ির খড়ের গাঁদার কাছ থেকে হানিফুর রহমান (২৪) ও তার বন্ধু বিল্পব চন্দ্র রায়ের (২৩) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাংলা৭১নিউজ/এম ইউ