বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিুব দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে বিদ্যুতের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় তিনি পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমকে মৌলিক চাহিদা হিসেবে চিিহ্নত করে সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ আমাদের উন্নয়নের চাবিকাঠি। আর সে লক্ষ্যমে সামনে রেখেই বর্তমান সরকার বিদ্যুতের আলোয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
অন্ধকারমুক্ত আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬টি উপজেলার শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী যে ৬টি শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা উদ্বোধন করেছেন তা হচ্ছে-গোপালগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির টুঙ্গীপাড়া উপজেলা, নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বন্দর উপজেলা, নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর পলাশ উপজেলা, চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বোয়ালখালী উপজেলা, কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আদর্শ সদর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভোলাহাট উপজেলা।
বাংলাদেশকে সুখী সমৃদ্ধ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি পরিবারে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্যে প্রতিমাসে ৭৮টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে বাপবিবো ৩ থেকে ৪ লাখ নতুন গ্রাহক সংযোগ প্রদান করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আলোর পথে যাত্রা শুরুর লক্ষ্যে ৯৬ সালে যখন আমরা ক্ষমতায় আসি তখন বিদ্যুৎসহ দেশের উন্নয়নে কাজ করার ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করি। মানুষ ভালভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। বিদ্যুতের আলোয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের ৭৮ ভাগ মানুষ আজ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে, যা বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে তাঁদের ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়তা করছে। এ ক্ষেত্রে সোলার এনার্জি ও কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ উল্লেখ যোগ্য।তিনি বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী ও সাশ্রয়ী হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও সিনিয়র সচিবগণ এবং বাপবিবোর্ড এর মাননীয় চেয়ারম্যানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ-ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এই স্লোগান সামনে রেখে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এই কার্যক্রমে দেশব্যাপী অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। বর্তমানে বাপবিবোর্ডের গ্রাহক সংখ্যা ১ কোটি ৫৮ লাখ। যা দেশের মোট ২ কোটি ১৮ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৭২ শতাংশ এবং বিদ্যুৎ সুবিধা প্রাপ্তির হার ৭০ শতাংশ।
এছাড়া বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৩০ লক্ষ গ্রাহক সংযোগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ প্রক্রিয়ায় আগামী ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ২৮টি উপজেলা, ২০১৭ সালের জুন মাসের মধ্যে ৭৫টি উপজেলা এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ১৭৬ টি উপজেলাসহ মোট ৪৬৫টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়িত হবে। এই সময়ে দেশে ৩৫ হাজার কিলোমিটার নতুন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুাতয়ন বোর্ড। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বাপবিবো ৯৫টি শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা এবং ৬টি সোলার চার্জিং স্টেশন নির্মাণ করবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৬ শতাংশ গ্রাহক সংযোগ, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৮৭ শতাংশ, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৯৫ শতাংশ গ্রাহক সংযোগের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যমাত্রার আওতায় ৫৭ লাখ প্রিপেমেন্ট মিটার স্থাপন করা হবে।
বর্তমানে বাপবিবোর্ডের বৈদ্যুতিক লাইনের পরিমাণ ৩ লাখ ১৫ হাজার কিলোমিটার। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিজস্ব অর্থায়নে ১টি সোলার চার্জিং স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। ৬টি শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলার মোট গ্রাহক সংখ্যা ২,৩৮,৬৫০ জন, লাইনের পরিমাণ ৩,৫২৭ কিলোমিটার এবং এতে অর্থ ব্যয় হবে ৫৩৫ কোটি টাকা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ