বাংলা৭১নিউজ, টুঙ্গিপাড়া: শিশুকাল থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েদের ভেতর আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে হবে। জাতির পিতা শিশুকাল থেকেই যেমন নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন দেশ ও জনগণের কল্যাণে, ঠিক সেভাবেই শিশুদের গড়ে তুলতে হবে।’
আজ ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০১৭’ উদযাপন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ার বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে আয়োজিত শিশু সমাবেশ, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার সেই জীবনী অনুসরণ করে দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসা, দেশের প্রতি কর্তব্যবোধ থাকা, কী পেলাম, কী পেলাম না- সেই চিন্তা না করা। কতটুকু দেশের জন্য করতে পারলাম সেই চিন্তাটা সবার মাঝে থাকতে হবে।’
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মালেকা একাডেমি গোপালগঞ্জের ৫ম শ্রেণীর ছোট্ট শিশু উপমা বিশ্বাস।
দিবসটি উপলক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ১শ’জনের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা এবং কোমলমতি শিশু-কিশোর, অভিভাবক ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখেছি একটি ছোট্ট শিশু বাবা-মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের কখনও সেই সৌভাগ্য হয়নি বাবার হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার। বাবার দোষ ছিল একটাই- তিনি বঞ্চিত, শোষিত মানুষগুলোর কথা সব সময় বলতেন। আর যখনই বলতেন তখনই তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হতো। কিন্তু তিনি দমে যাননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি গ্রামবাংলার মানুষকে চিনতেন, জানতেন, অনেক কাছে থেকে দেখেছেন তাদের সমস্যা। কাজেই তিনি সব সময় নিজেকে একটি আদর্শ নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন। আদর্শটা হচ্ছে জনগণের সেবা ও জনকল্যাণে কাজ করা।
মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর গভীর মমত্ববোধ সম্পর্কে সরকার প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন স্কুলে পড়তেন তখনই তার একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। যার কাজ ছিল ধানের মৌসুমে গোলায় যখন ধান উঠত সেই ধান বা টাকা-পয়সা জোগাড় করে দরিদ্র ছেলেমেয়েদের বই কিনে দিয়ে তাদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা, সাহায্য করা।
তিনি বলেন, আমি সবার কাছে আহ্বান জানাব-প্রত্যেক অভিভাবক ও শিক্ষক দেখবেন তাদের ছেলেমেয়ে কাদের সঙ্গে মেশে। তারা বিপথে যাচ্ছে কিনা। কোনোরকম মাদকাসক্তি বা জঙ্গিবাদের পথে যাচ্ছে কিনা তা দেখবেন। ছেলেমেয়েরা স্কুলে অনুপস্থিত কিনা তা শিক্ষকরাও লক্ষ্য রাখবেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠনেও ভূমিকা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী ইসলাম শান্তির ধর্ম উল্লেখ করে কোনো ধর্মই মানুষকে খুন করার কোনো অধিকার দেয়নি বলেও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ’৭৫-এর বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করে বলেন, আমরা চাই না আর কোনো ছেলেমেয়ে এভাবে একই দিনে পিতামাতা ও স্বজনহারা হোক।
বাংলা৭১নিউজ/এন