সংবাদ শিরোনাম
বগুড়ায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববিরোধের জের ধরে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে (৩৭) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় মিজানের পক্ষের হামলায় গুরুতর আহত লেদু (৩৫) নামে একজন হাসপাতালে মারা গেছেন।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার গোকুল বাজার এলাকায় এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ ও ছিলিমপুর মেডিক্যাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রুবেল এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মিজানুর রহমান মিজান বগুড়া সদর উপজেলার গোকুলের আফছার আলীর ছেলে ও লেদু গোকুল দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা।
বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী ও গোকুলের বাসিন্দারা জানান, গোকুল ইউনিয়ন যুবদলের সদ্য বহিষ্কৃত নেতা বিপুল, লেদুর সঙ্গে মিজানের দীর্ঘদিনের বিরোধ। ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে গোকুল হল বন্দরে সনি রহমান খুন হন। এই সনি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মিজানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। সনি হত্যার এক নম্বর আসামি বিপুল। আর তিন নম্বর আসামি লেদু। সেই বিরোধের জেরে রাতে বিপুল তার দলবল নিয়ে মিজানের ওপর হামলা চালান।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা জানান, মিজান সদর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। তাকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মিজান রাত ৮টার দিকে ওই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে ৬-৭ জনের সাথে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় বিদ্যুৎ ছিলো না। তখন পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা মিজানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যায়। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শজিমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আনার পর মিজানের পক্ষের লোকজন আহত ব্যক্তিকে লেদু নামে শনাক্ত করেন। পরে তারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তারা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে জরুরি বিভাগে ঢুকে পড়েন। সেখানে তারা আহত লেদুকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন।
একই সঙ্গে জরুরি বিভাগে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এ সময় জরুরি বিভাগে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন যমুনা টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরো প্রধান মেহেরুল সুজনসহ কয়েকজন সাংবাদিক। লেদুকে মারধরের ভিডিও ধারণ করায় তাদের ওপর হামলা চালায় মিজানের পক্ষের লোকজন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা শজিমেক হাসপাতালে উপস্থিত হন।
সাংবাদিক মেহেরুল সুজন বলেন, আমি আগে থেকেই মোবাইলে ভিডিও করছিলাম। উত্তেজিত লোকজন সব ভেঙে জরুরি বিভাগের ভেতর ঢুকে পড়েন। তারা এসেই আহত লেদুর ওপর হামলে পড়ে। সে যখন মারা যায় তখন তাদের নজর পড়ে আমার মোবাইলের দিকে। এরপর আমার ওপর হামলা চালায় তারা। আমার মাথায় আঘাত লেগেছে। চোখে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে।
ছিলিমপুর মেডিক্যাল ফাঁড়ির এসআই রুবেল জানান, গোকুলের হামলার ঘটনায় মিজান ও লেদু নামে দুজনের লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এর মধ্যে মিজান আগেই মারা যান। আর জরুরি বিভাগে আহত অবস্থায় আনার পর লেদু মারা গেছেন। ভেতরে কি হয়েছে তা জানি না।
বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, দুজনের লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে চেষ্টা করছে পুলিশ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে
