শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৮:০৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য ৯৪০ প্রশ্ন ভরিতে আরও ১৮৭৮ টাকা কমলো সোনার দাম সব প্রার্থী আমাদের কাছে সমান: ইসি আলমগীর টোল আদায়ে দুর্নীতি, দুদকের হস্তক্ষেপে ইজারা বাতিল রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে আছে ইউরোপ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : কাদের এপ্রিলে নির্যাতনের শিকার ১৯৩ নারী-শিশুকন্যা ৯ মে পর্যন্ত চলবে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মৃত ব্যক্তিদের জাল সনদ: মিল্টন সমাদ্দারের ৩ দিনের রিমান্ড গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয়, উন্মুক্ত : তথ্য প্রতিমন্ত্রী যাত্রীবাহী বাস থেকে ৭টি স্বর্ণের বারসহ চোরকারবারি আটক আমন মৌসুম থেকেই চাল ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধ করা হবে : খাদ্যমন্ত্রী টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১০ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণের অভিযোগ আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে শনিবার থেকে খোলা স্কুল-কলেজ: শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইসলামী ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা জমা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো ৪৯ টাকা শেয়ার ছাড়বে রূপালী ব্যাংক নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহারে বিষমুক্ত লিচু চাষে সাফল্য

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ২ জুন, ২০১৭
  • ৩৫৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, রাজশাহী: এবার লিচুতে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে সফল হয়েছেন রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক। পরীক্ষামূলকভাবে নিজের খামার বাড়িতে বোম্বে জাতের লিচু গাছে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিলেন তিনি। গাছ থেকে লিচু নামিয়ে তিনি দেখেন, বাজারে বোম্বে জাতের যে লিচু বেচাকেনা হয়, তার চেয়ে তার বাগনের লিচু আকারে বড়। সব লিচুর রঙই টকটকে লাল এবং বাজারের লিচুর চেয়ে স্বাদও বেশ মিষ্টি। তার মতে, ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তিতে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বিষমুক্ত লিচু পেয়েছি। নিশ্চিন্তে খেয়েছি। অন্যদেরও স্বাস্থ্যসম্মত লিচু খাইয়েছি।

এর আগে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহারে আম ও পেয়ারা চাষে সফলতা এসেছে। রাজশাহীতে এখন অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে এ প্রযুক্তিতে আম ও পেয়ারা চাষ করছে। তবে রাজশাহীর কৃষকরা এখনও এই পদ্ধতিতে লিচু চাষ শুরু করেননি। অথচ এ প্রযুক্তিতে চাষ করা বিষমুক্ত আম রফতানি হচ্ছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের আটটি দেশে। আম চাষে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তির এই সফলতার পর লিচুতে এই প্রযুক্তি কাজে লাগানো যায় কিনা, সেই চিন্তা থেকে এ বছর পবা উপজেলার মতিয়াবিলে নিজের খামার বাড়ির লিচু গাছে মঞ্জুরুল হক ব্যবহার করেন এই প্রযুক্তি। প্রথম বছরেই সফলতা পেয়েছেন তিনি।

তিনি জানান, প্রতিটি ব্যাগ তিনি কিনেছেন সাড়ে তিন টাকা দরে। একটি ব্যাগে জায়গা হয়েছে ২৫ থেকে ৩০টি লিচু। লিচুর দুই-তিনটি থোকায় ব্যাগ ভরে গেছে। ১৫ বছর বয়সের বোম্বাই জাতের একটি গাছ থেকে তিনি গত বছর চার হাজার পিস লিচু পেয়েছিলেন। এবার ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে লিচু পেয়েছেন প্রায় ৬ হাজার।

lichu-2-1

মঞ্জুরুল হক বলেন, লিচুর বড় সমস্যা সান বার্ণ অর্থাৎ রোদে পুড়ে যায় লিচু। এরপর পোড়া জায়গা ফেটে লিচু পঁচে যায়। ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহার করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সাধারণত একটি থোকায় যে পরিমান লিচু ধরে, তার সবগুলো পুষ্ট হয়ে ফলে পরিণত হয় না। ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রতিটি লিচুই ফলে রূপান্তরিত হয়। ফলে ফলন বাড়ে। এছাড়া এ প্রযুক্তি ব্যবহারে লিচুকে পোকা ও রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়। ছিদ্রকারী পোকামাকড় লিচু নষ্ট করে। গান্ধী পোকা লিচুর বোটার রস চুষে খায়, ফলে লিচু নষ্ট হয়ে ঝরে যায়। এই পোকামাকড় থেকে রক্ষা পেতে কৃষকরা অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে। ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহারে পোকামাকড় ও ছত্রাকজনিত রোগের হাত থেকে লিচুকে রক্ষা করা যায়। ফলে কৃষককে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। এতে টাকার যেমন সাশ্রয় হয়, কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন না পড়ায় পরিবেশও দূষণ হয় না।

মঞ্জুরুল হক বলেন, লিচুর আর একটি সমস্যা হলো, চামচিকা, বাদুড় ও কাঠবিড়ালীর উৎপাত। এসব প্রাণীর লিচু খুব পছন্দ। ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহার করলে চামচিকা, বাদুড় ও কাঠবিড়ালীর হাত থেকে লিচু থাকে সুরক্ষিত। আর ব্যাগের ভেতর সুরক্ষিত অবস্থায় থাকায় সব লিচু আকারে বড় হয়, রঙ হয় টকটকে লাল। এসব তথ্য দিয়ে তিনি জানান, ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এবারের ঝড়-বাতাসেও তার গাছ থেকে কোন লিচু ঝরে পড়েনি। ফলে উৎপাদন বেড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, এসব লিচু শতভাগ রাসায়নিকমুক্ত।

মঞ্জুরুল হক বলেন, চাষিদের মধ্যে এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণের আগে তিনি নিজে ব্যবহার করে দেখলেন। তাতে ফল ভালো পাওয়া গেল। এছাড়া ফ্রুট ব্যাগিং করা লিচু স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এক সপ্তাহ বেশি গাছে রাখা যায়। এতে দামও বেশি পাওয়া যায়। প্রযুক্তিটি চাষিদের মাঝে সম্প্রসারণ করা গেলে তারা লাভবান হবেন। তিনি বলেন, সাধারণত লিচুচাষিরা যেহারে গাছে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করেন, ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তিতে তার প্রয়োজন হয় না। লিচুর ফুল আসার আগে একবার গাছে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। এরপর ব্যাগিং করার কয়েকদিন আগে একটি ছত্রাকনাশক ও একটি কীটনাশক স্প্রে করলেই হবে। এরপর লিচু পাকার ২৫ থেকে ৩০ দিন আগে ব্যাগিং করতে হবে।

মঞ্জুরুল হকের খামার বাড়িতে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে লিচু চাষ পরিদর্শন করে এসেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালন মোঃ আব্দুল হান্নান ও পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মঞ্জুরে মওলা।

অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, লিচু গাছে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করে মঞ্জুরুল হক সফলতা পেয়েছেন। তার এই সফলতা কাজে লাগাবে কৃষি বিভাগ।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি বলেন, পাবনার ঈশ্বরদীতে কিছু কিছু লিচু গাছে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তির ব্যবহার হয়। তবে রাজশাহীর চাষিরা এখনও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন না। রাজশাহীতে পরীক্ষামূলক এই প্রযুক্তি ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়ায় আগামি বছর থেকে তা ব্যবহারের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।

বাংলা৭১নিউজ/সিএইস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com