ফেসবুকে নিজের নাম পাল্টে ও মেসেঞ্জারে অন্য নারীর ছবি দিয়ে প্রবাসীর সঙ্গে প্রেমের অভিনয়। পরে বিভিন্ন কৌশলে হাতিয়ে নেওয়া হয় অর্ধকোটি টাকা। এ অভিযোগে মূল অভিযুক্তসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন বগুড়ার বাসিন্দা তহমিনা খাতুন (৩০) ও তার স্বামী আজাদুল ইসলাম (৪৬)। বুধবার (২০ মার্চ) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ভুক্তভোগীর নাম সাইদ। তিনি মেহেরপুর সদর উপজেলার বেলতলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। থাকেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। প্রবাসীর পক্ষে প্রতারণার মামলাটি করেন তার দুলাভাই বিপ্লব হোসেন।
মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, ২০১৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবাসী সাইদের সঙ্গে বগুড়া আজিজুল হক কলেজের বিবিএর শিক্ষার্থী তহমিনা খাতুন নিজের নাম ‘কনিকা’ ধারণ করে ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মেসেঞ্জারে নিজের ছবি না দিয়ে অন্য এক নারীর ছবি দিয়ে তাকে আকৃষ্ট করেন। এরপর প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে হাতিয়ে নেন টাকা।
গত পাঁচ মাসে সাইদকে ব্ল্যাকমেল করে ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তহমিনা। এভাবে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৯টি সিম ব্যবহার করে সাইদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকার ওপরে হাতিয়ে নেন তিনি।
সবশেষ সাইদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তহমিনাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে কক্সবাজারে একটি অপহরণ মামলা করা হয়েছে বলে সাইদের পরিবারকে জানানো হয়। সেই মামলা নিষ্পত্তি করতে সাত লাখ টাকা লাগবে বলে পরিবারের কাছে চাপ দেওয়া হয়। সব ঘটনায় তহমিনা ফোনে নিজের কণ্ঠ পরিবর্তন করে পুরুষ কণ্ঠে প্রতারণা করেন।
বিষয়টি সন্দেহ হয় সাইদের পরিবারের। বিষয়টি মেহেরপুর সাইবার ক্রাইম সেলকে জানান সাইদের দুলাভাই সোহেল রানা। পরে তিনি বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই সদর থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় বগুড়ার শাজাহানপুর থেকে তহমিনা ও আজাদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ডিবি ও সাইবার ক্রাইম সেলের একটি দল। গ্রেফতারের পর অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় জড়িত তহমিনার বন্ধু একই উপজেলার মেসার্স এসআর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রবিউল ইসলামের নাম উঠে আসে। তিনি ও তহমিনা অনলাইন একটি বেটিং সাইটের সঙ্গে জড়িত বলেও তথ্য পায় পুলিশ। রবিউল ইসলামকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি সাইফুল ইসলাম।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ