সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৩:০৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
রূপালী ব্যাংকে হিসাব খোলার মাইলফলক উদযাপন রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় সহযোগিতার জন্য ওআইসি সদস্যদের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন শেখ হাসিনা ‘আওয়ামী লীগের আমলে কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হয়নি’ কক্সবাজারে পাহাড়ি ছড়ায় গোসলে নেমে দুই শিশুর মৃত্যু মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব নিলো শামসুল হক ফাউন্ডেশন জেরুজালেমে আল জাজিরার কার্যালয়ে ইসরায়েলের অভিযান বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পেলেন বিএনপি নেতা আমান সিরিয়াল অনুযায়ী মামলার শুনানি হবে: প্রধান বিচারপতি অবৈধ টিভি চ্যানেলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত অভিবাসন সংক্রান্ত অপতথ্য রোধে একত্রে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইতালি স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে ফাঁস নিলেন আনসার সদস্য সুনামগঞ্জে অব্যাহত বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৬০৩ সিলেটে সাত সকালে কালবৈশাখীর তাণ্ডব সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ধোঁয়া দেখলেই পানি স্প্রে চলে গেলেন ‘টাইটানিক’খ্যাত অভিনেতা বার্নার্ড হিল হামাসের হামলার জবাবে রাফায় ইসরায়েলের হামলা, নিহত ১৯ আগামী সাত দিন হতে পারে ‘বৃষ্টির সপ্তাহ’ রাজধানীতে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ফেলনা বর্জ্য থেকে যেভাবে অর্থ রোজগার করছেন ভারতীয়রা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৯
  • ২১৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: গোবিন্দ আর যোগিন্দর দুই ভাই।”ছুটির দিনে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা থাকে”, বলছিলেন ৩৪বছল বয়সী গোবিন্দ। কোন এক রোববারে তার সাথে যখন বিবিসি সংবাদদাতার কথা হচ্ছিল তখন সে গুরগাঁও এর একটি স্ক্র্যাপ-ইয়ার্ডে (যেখানে বাতিল জিনিসপত্র ফেলে রেখে যাওয়া হয়) সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল।দিল্লির কাছাকাছি এই উপশহরের কাঁচ এবং কনক্রিটের ধূলোবিালিময় সেই স্থানে তার আশেপাশে বস্তা-ভর্তি পত্রিকার পাতা, কাগজ, মেটাল, কাঁচ, প্লাস্টিক এবং আরও অনেককিছু। সেখানে আছে পুরনো বাতিল সুটকেস, কিছু বাইসাইকেল ইত্যাদিও।শিপ স্ক্র্যাপ ডিলার এর মালিক গোবিন্দ এবং তার ভাই যোগিন্দর। ১০ বছর ধরে তারা এইসব হাবিজাবি সংগ্রহ করছেন।

অন্যান্য লোকেরা যেসব জিনিস শেষপর্যন্ত ব্যবহার করে আর মূল্যহীন নমনে করে ফেলে রেখে গেছে সেগুলো থেকেই তারা কিছু না কিছু বের করে আনছে।বড় ভাই যোগিন্দর বলছেন, “সময়ের সাথে সাথে এসব পরিত্যক্ত আবর্জনার ধরনও বদলে গেছে। এখন সব কিছুই হালকা ধরনের, আগের তুলনায় এখন প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বেশি। রূপার বদলে জায়গা নিয়েছে তামার তার।”। তিনি বলেন গড়ে প্রতিমাসে তাদের আয় হয় ৩০,০০০ রুপি।এই মাটেই একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন আছে সবুজ পাতাময় গাছপালা প্রখর রৌদ্রতাপ ঢেকে দেয়। সব কাজ চলে এখানে খোলা আকাশের নিচেই। তবে ঢেউটিন সেখানে কাগজ রক্ষায় সাহায্য করে।

এক কোনায় একটি কেরোসিনের চুলা রয়েছে যেখানে রাতে প্রয়োজনের খাবার বানিয়ে খাওয়া সম্ভব। কখনো কখনো তাদের দুই ভাইকে এখানে রাতেও থেকে যেতে হয়। সেসময় তারা ছোট্ট বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে নিতে পারে।যোগিন্দর বলছেন, অনেকের কাছে ফেলনা এইসব জিনিস বহু ডলার মূল্যের, ভারতের জন্য ভবিষ্যৎ ।স্ক্র্যাপ ডিলারদের বলা হয় কাবাডিওয়ালা আর রাডডিওয়ালা-তারা ভারতের, প্রধানত অনানুষ্ঠানিক কিন্তু শক্তিশালী, পুন:ব্যবহারযোগ্য শিল্পের অন্তর্ভুক্ত।বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কোম্পানি ওয়েস্ট ভেঞ্চারের প্রতিষ্ঠাতা রোশান মিরান্ডা বলেন, ভারতের অনেক শহরেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে এভাবে আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়না।

কিন্তু অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ভারতীয়রা অনেক বেশি বর্জ্য উৎপাদন করছে কারণ প্রক্রিয়াজাত খাবার রান্নাঘরের জায়গা দখল করেছে। এছাড়াও রয়েছে তাক ভরা সস্তা বৈদ্যুতিক সামগ্রী আর ফোন ভরা ‘ফ্রি হোম ডেলিভারি সুবিধা’ সম্বলিত অ্যাপ।ফলে অনানুষ্ঠানিক আবর্জনা সংগ্রহকারীদের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে।ভারতীয় সরকারের হিসাব অনুসারে ৬২মিলিয়ন টন উৎপাদন করে ভারত কিন্তু এর সংগ্রহ করা, বিভিন্ন প্রকারের বাছাই এবং বিক্রি করার সাথে কতজন যুক্ত আছে তার পরিষ্কার কোনও পরিসংখ্যান নেই।গোবিন্দ স্কুল শেষ করলেও কখনো কলেজে যাননি। নিজের স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে যাদের বয়স ১৩ এবং ১০ বছর। তাদের নিয়ে কাছেই এক গ্রামে বাস করেন তিনি। তার তার আগে শুরু করেছেন এই ব্যবসা।

এখন তার রুটিন হল প্রতিদিন সকাল নয়টায় শুরু করা এবং আটঘণ্টা ধরে বাড়িতে বাড়িতে কলিং-বেল বাজিয়ে প্রায় ১০০র মতো বাড়ি থেকে ফেলনা সংগ্রহ করেন।”ভারতে পুন:নবায়নে জন্য আমাদের সবকিছু কিনতে হয়। কিন্তু অন্যান্য দেশে আপনি টাকা খরচ করলে কেউ এসে পুন:নবায়নের পিক আপ করবে”, গোবিন্দ তার কিছু বিদেশী ক্রেতাদের কাছ থেকে এমনটা জানতে পেরেছেন বলে জানান।তার ভাণ্ডারের জিনিসপত্রের ভেতরে ৮০% ই খবরের কাগজ, প্রতি সপ্তাহ সে ২০০০ কিলোগ্রাম খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন , বই, কার্ড-বোর্ড, সংগ্রহ করে।

তবে পুন:ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে এটাই সবচেয়ে সস্তা। এক কিলোগ্রামের দাম ১২ রুপির মত যা এক ডলার বার এক পাউন্ডের কম।”আমরা খুব কমই প্লাস্টিক পাই কারণ এগুলো আবর্জনার সাথে ফেলে দেয়া হয়। আমরা যেগুলো পাই তা পরিচ্ছন্ন”।ভারতে যারা বর্জ্য সংগ্রহ করেন তাদের ধরন দুইরকম। “পরিষ্কার বর্জ্য” সংগ্রহকারী যেমন গোবিন্দ যারা পুন:নবায়ন যোগ্য বিভিন্ন দ্রব্য সংগ্রহ করেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে। আরেক দল হল আবর্জনা সংগ্রহকারী যারা ডাস্টবিন, রাস্তাঘাট, ডোবানালা ভরাটের জন্য ফেলা আবর্জনা থেকে বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহ করে।”বাড়ি বাড়ি গিয়ে যারা আবর্জনা খুঁজে আনেন তারা নিজেদেরকে রাস্তাঘাট থেকে যারা আবর্জনা সংগ্রহ করেন তাদের চেয়ে উচ্চ শ্রেণীর বলে মনে করেন।

হিন্দু ধর্মানুসারীদের সবচেয়ে উঁচু জাত ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের লোক হওয়া সত্ত্বেও এই কাজকে ছোট করে দেখতে রাজি নন গোবিন্দ। ছুটির দিনগুলোতে সে একটি স্কুলের বাসের চালক হিসেবে কাজ করে।অনেক সময় ডায়াপারও একই ব্যাগে করে লোকজন দিয়ে দেয় উল্লেখ করে সেসব বিব্রতকর বলে জানান জোগিন্দর। এছাড়া এমনকিছু দেয়া হয় যার কথা তিনি নিজের মুখে বলতে চাইলেন না, তবে অনুমান করা যায় তিনি স্যানিটারি ন্যাপকিনের কথাই বলছিলেন। তবে এটা কি তাদের খুব একটা রাগান্বিত করতে পারেনা। কারণ তারা মনে করেন: এটা আমাদের ব্যবসা।”

সূত্র:বিবিসি বাংলা/বাংলা৭১নিউজ/জেড এইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com