পাবনার কাজীরহাট ফেরিঘাট এলাকায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পণ্যবাহী ট্রাকের যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ফেরি স্বল্পতার কারণেই ঘাটে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে ও দুই-একদিনের মধ্যেই আরেকটি ফেরি কাজীরহাট-আরিচা রুটে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) থেকে এ যানজট সৃষ্টি হতে শুরু করে। শনিবার (১৭ জুলাই) যানজট আরও দীর্ঘ হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘাট থেকে শুরু করে বাঁধের হাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ট্রাকের দীর্ঘ সারি। এতে প্রায় পাঁচ শতাধিক পণ্যবাহী ও কুরবানির পশুবাহী ট্রাক রয়েছে।
ট্রাকচালক কাজল (৪০) জানান, তিনি সোনা মসজিদ এলাকা থেকে গমবোঝাই করে ঢাকা অভিমুখে যাচ্ছেন। কিন্তু শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তিনি যানজটে আটকা পড়েছেন।
একই কথা জানালেন ট্রাকচালক রাজ্জাক। তিনি পাবনার কাশীনাথপুর থেকে রওনা দিয়ে যানজটে আটকা পড়েছেন।
বেশ কিছু চালক ও গাড়ির স্টাফ জানান, কোরবানির পশুবাহী ট্রাকগুলোকে দ্রুত সিরিয়াল দেয়া হচ্ছে। এজন্য তাদের পণ্যবাহী গাড়িগুলো আটকা পড়েছে। সারারাত তাদের গাড়িতে কাটছে। ঘাটে ফেরির সংখ্যা বেশি থাকলে তাদের এমন ভোগান্তি হতো না।
কাজীরহাট ঘাটে খাবার হোটেল মালিক সালমান হোসেন জানান, তিনি বৃহস্পতিবার থেকেই ঘাটে যানজট দেখছেন। শনিবার এ জট আরও দীর্ঘ হয়েছে। গাড়ির চালক-হেলপাররা দীর্ঘপথ হেঁটে হোটেলে খেতে আসছেন।
তিনি আরও জানান, ঘাটে খাবার হোটেল থাকলেও থাকার কোনো হোটেল নেই। ফলে গাড়ির লোকজনের কষ্ট বেড়েছে।
কাজীরহাটের স্থানীয় ব্যবসায়ী আয়ুব আলী জানান, তিনি শনিবার সকালে দেখেছেন মূল ঘাট থেকে বাঁধেরহাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার শুধু ট্রাকের সারি রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাটের ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান জানান, কোরবানির পশুবাহী ট্রাক বেশি হওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঘাটে এজন্য প্রায় ৫০০ ট্রাকের আটকে রয়েছে। ফেরির ট্রিপ সংখ্যা বাড়লে যানজট কমে যাবে।
তিনি আরও জানান, আরিচা-কাজীরহাট রুটে এখন তিনটি ফেরি চলাচল করছে। একটি ফেরি নষ্ট হওয়ায় গত একমাস ধরে সেটি চলছে না।
বিআইডব্লিউটিসি কাজীরহাট ঘাট ইনচার্জ খালেদ মোশারফ জানান, ফেরি দ্রুতই লোড-আনলোড হচ্ছে। এরপরও যানজট থেকে যাচ্ছে।
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী জানান, তিনিসহ থানা পুলিশের একটি দল ঘাট এলাকায় অবস্থান করছেন। শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছেন তারা।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে কাজীরহাট ঘাট পরিদর্শনে এসে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরি এমপি বলেছেন, শিগগিরই আরিচা-কাজীরহাট রুটে আরেকটি রো-রো ফেরি দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ’র ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, তারা আশা করছেন দুই-একদিনের মধ্যেই এ রুটে আরেকটি ফেরি সংযুক্ত হবে। এতে যানজট দ্রুত কমে যাবে।
বাংলা৭১নিউজ/জিকে