শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০১:১৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য ৯৪০ প্রশ্ন ভরিতে আরও ১৮৭৮ টাকা কমলো সোনার দাম সব প্রার্থী আমাদের কাছে সমান: ইসি আলমগীর টোল আদায়ে দুর্নীতি, দুদকের হস্তক্ষেপে ইজারা বাতিল রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে আছে ইউরোপ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : কাদের এপ্রিলে নির্যাতনের শিকার ১৯৩ নারী-শিশুকন্যা ৯ মে পর্যন্ত চলবে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মৃত ব্যক্তিদের জাল সনদ: মিল্টন সমাদ্দারের ৩ দিনের রিমান্ড গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয়, উন্মুক্ত : তথ্য প্রতিমন্ত্রী যাত্রীবাহী বাস থেকে ৭টি স্বর্ণের বারসহ চোরকারবারি আটক আমন মৌসুম থেকেই চাল ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধ করা হবে : খাদ্যমন্ত্রী টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১০ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণের অভিযোগ আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে শনিবার থেকে খোলা স্কুল-কলেজ: শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইসলামী ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা জমা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো ৪৯ টাকা শেয়ার ছাড়বে রূপালী ব্যাংক নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

ফিরে দেখা ২০১৭: মানবিক বাংলাদেশ ও মানবাধিকার নিয়ে ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭
  • ১৮৪ বার পড়া হয়েছে
সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে এ বছর

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ বিশ্বে এক মানবিক রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি গড়ে তুললেও অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার ইস্যুতে সমালোচনার মুখে ছিল সরকার৷ দ্রব্যমূল্য, প্রধান বিচারপতি, প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নানা ঘটনা আলোচনার জন্ম দিয়েছে এ বছর৷

২০১৭ এর ২৫শে আগস্ট থেকে নতুন করে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা৷ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে এ পর্যন্ত ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছেন৷ বাংলাদেশ সরকার তাদের কক্সবাজারে আশ্রয় দিয়েছে৷

রোহিঙ্গা সংকট

রোহিঙ্গা সংকট

এই নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ এবং শিশুদের আশ্রয়, খাবার, চিকিৎসাসহ নানা সাহায্য করছে বাংলাদেশ৷ সরকারের পাশাপাশি নানা সংগঠন ও সাধারণ মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে৷ শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের এই মানবিক আচরণের ভূঁয়সী প্রশংসা করেছে জাতিসংঘসহ অনেক আর্ন্তজাতিক সংগঠন৷ একটি মানবিক রাষ্ট্রের এই ভাবমূর্তি গড়ে তোলার জন্য প্রশংসিত হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও৷

মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের  সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেন, ‘‘বাংলাদেশে ২০১৭ সালে মানবাধিকার নিয়ে পরস্পরবিরোধী ঘটনা ঘটেছে৷ মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যেমন মানবিক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছে তেমনি গুম এবং নিখোঁজের ঘটনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছে৷ বিশেষ করে বছরের শেষ দিকে হঠাৎ করেই গুম এবং নিখোঁজের ঘটনা বেড়ে গেছে৷”

বাংলাদেশে ২০১৭ সালে সাবেক কূটনীতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, আইটি বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীসহ অনেকে গুম, অপহরণ ও নিখোঁজের শিকার হন৷ তাদের কেউ ফিরে এসেছেন আবার কেউ আসেননি৷ আবার কেউ নিখোঁজ হওয়ার অনেক দিন পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে৷ বিভিন্ন পেশার মানুষ নিখোঁজের মধ্য দিয়ে এববছর নিখোঁজ এবং গুমের ঘটনা সাধারণের মনে উদ্বেগকে বাড়িয়ে দিয়েছে৷

এছাড়া এবার বছর জুড়ে আলোচনায় ছিল প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং পাঠ্যপুস্তক বিতর্ক৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে দ্বিতীয় শ্রেণির পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে৷ আর শিক্ষা খাতে দুর্নীতি বছরের শেষে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে৷ এমনকি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষা ক্ষেত্রে সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতি অনুমোদনের কথা বলেন৷ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেছেন,‘‘শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে৷ মানেরও অধঃপতন ঘটছে৷ শিক্ষায় দুর্নীতি পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলেছে৷”

যাদের হারালাম

যাদের হারালাম

হাফিজ বলেন, ‘‘দেশে দুর্নীতি বেড়েছে৷ রাজনৈতিক পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি, কথা বলার স্বাধীনতা কমেছে৷ আর  প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে৷ একটি রায়কে কেন্দ্র করে একজন প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের ঘটনা নজীরবিহীন৷”

সংবিধানের ষোড়শ সংবিধান বাতিলের রায় আপিলে বহাল রাখা নিয়ে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাচাপের মুখে পড়েন৷ ওই রায়ের মধ্য দিয়ে বিচারপতিদের অভিসংশনে সংসদের ক্ষমতা বাতিল হয়ে যায়৷ এরপর ছুটি নিয়ে এসকে সিনহা অসুস্থতা দেখিয়ে দেশত্যাগ করেন৷  পরে ১১ নভেম্বর বিদেশ থেকেই পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেন৷

বছরের শুরুতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে একটি ভাস্কর্য স্থাপন নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়৷ এটি অপসারণ নিয়ে আন্দোলনের হুমকি দেয় হেফাজতে ইসলাম৷ অন্যদিকে ভাস্কর্য না সরানোর পক্ষে অবস্থান নেয় সুশীল সমাজের অনেকে৷ শেষপর্যন্ত ২৭ মে সুপ্রিম কোর্টের মূল প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে ভাস্কর্যটি আদালতের বর্ধিত(অ্যানেক্স) ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়৷

২০১৭ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে হাওর অঞ্চলে বন্যা পুরো অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে৷ বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর হিসেবে, হাওরে আগাম বন্যা ও ৩২ জেলায় মৌসুমি বন্যায় মোট ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে৷ এসব জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মোট মানুষের সংখ্যা ৮২ লাখ ১৭ হাজার ৪৩২ জন৷ ক্ষতিগ্রস্ত মোট ফসলি জমির পরিমাণ ছয় লাখ ছয় হাজার ৯৫৫ হেক্টর৷ এর মধ্যে এক লাখ দুই হাজার ৮০৮ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণভাবে এবং পাঁচ লাখ চার হাজার ১৪৭ হেক্টর জমির ফসল আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷

এছাড়া চলতি বছরে চালের দাম অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেছে৷ সরকারকে চাল আমদানি করতে হয়েছে৷ পেঁয়াজের দামও রেকর্ড বেড়েছে৷ এই অভিঘাত নতুন বছরেও অব্যাহত থাকতে পারে৷

ভুলে যাওয়া বন্যা দুর্গতরা

ভুলে যাওয়া বন্যা দুর্গতরা

বাংলাদেশে ২০১৮ সালকে নির্বাচনের বছর হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে৷ নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে দেশে আরো খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন-এর প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘২০১৭ নির্বাচনের প্রস্তুতির বছর ছিল। নির্বাচন কমিশন কতটা প্রস্তুত তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে যদি নির্বাচন ভালো না হয় তাহলে দেশে আরো খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। দেশে সুশাসন আসেনি। গণতন্ত্র না এলে সুশাসন আসবে না৷’’

হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ‘‘২০১৭ সালে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে৷ রাজনৈতিক পরিবেশের অবনতি ঘটেছে৷ দেশের মানুষ এখন আর প্রতিবাদও করে না৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘দেশে সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিবেশ রয়েই গেছে৷ কোনো সমঝোতা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নতির কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না৷”

২০১৭ সালে বাংলাদেশে গণপরিবহন ব্যবস্থায় উবার নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, আলোচনায় এসেছে পাঠাও৷ সিএনজি অটোরিকশা এবং ট্যাক্সি ক্যাবের দৌরাত্ম্যের মুখে এই দু’টি পরিবহন সেবা রাজধানীবাসীকে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দিয়েছে৷ আর এই সেবা এখন বিভাগীয় ও জেলা শহরেও সম্প্রসারণের দাবি উঠেছে৷

এবছর জিডিপি-তে রেকর্ড পরিমাণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে,  যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি৷ বিবিএস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ সালে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২৷ ২০১৫-১৬ সালের তুলনায় এই প্রবৃদ্ধি ০ দশমিক ১৭ ভাগ বেশি৷ ফলে জিডিপির আকার বেড়ে হয়েছে ২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ এই দুই বছর বাদ দিলে আগে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ শতাংশের ঘরে৷

বাংলাদেশের মানুষের এখন মাথাপিছু আয় বছরে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০০ টাকা৷ আর এ বছরই শুরু হয়েছে পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানোর কাজ৷ অনেক বিতর্কের পর নিজস্ব অর্থায়নেই এই সেতু নির্মাণ করছে বাংলাদেশ৷

বাংলা৭১নিউজ/সংগৃহিত:ডয়চে ভেলে/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com