বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেল ময়মনসিংহের দুই যুবকের, পরিবারে শোকের মাতম বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা: সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর কারাগারে প্রশাসন নিরপেক্ষ করতে ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ অপসারণ করুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল্লাহ শফিকে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা বইমেলায় স্টলের জন্য আবেদন করা যাবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নতুন সূচি প্রকাশ ভারত থেকে ২৫ হাজার টন চাল আসছে বৃহস্পতিবার আইএসও/আইইসি ২৭০০১:২০২২ সনদ অর্জন করলো পূবালী ব্যাংক কলকাতার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন পি কে হালদার নিজ দেশে ফিরে যেতে রোহিঙ্গা মুফতি-ওলামাদের সমাবেশ ভিডিও: কাজাখস্তানে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে নিহত অন্তত ৪০ উপকূলীয় মানুষের নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে কোস্টগার্ড দেখে নিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি, বাংলাদেশের ম্যাচ কবে কোথায়? ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ, স্নাতক পাসেও আবেদনের সুযোগ

ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রভাব, স্মরণকালের সর্বনিম্ন পানি পেল বাংলাদেশ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বুধবার, ৪ মে, ২০১৬
  • ১৮৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: ত্রিশ বছর মেয়াদি গঙ্গা চুক্তি স্বাক্ষরের পর এই প্রথম বাংলাদেশ সর্বনিম্ন পানি পেয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কা বাঁধ পেরিয়ে এত কম পানি আর কখনই বাংলাদেশের ভাগ্যে জোটেনি। এমনকি গঙ্গা চুক্তি যখন ছিলনা; সেই সময়টাতে পানি নিয়ে এমন দূর্ভোগের মুখে পড়তে হয়নি বাংলাদেশ। দেশের পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ২১ থেকে ৩১ মার্চ ওই দশদিনে ভারত বাংলাদেশকে ১৫ হাজার ৬০৬ কিউসেক পানি দিয়েছে। যা ছিল স্মরণকালের সর্বনি¤œ পানির রেকর্ড।

এদিকে, ১৯৯৬ সালে সালে স্বাক্ষরিত ত্রিশ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানি চুক্তি অনুযায়ি বাংলাদেশ কেন এত কম পানি পেল-এ নিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় কিম্বা যৌথ নদী কমিশনের পক্ষ থেকে কোন প্রতিবাদ জানানো হয়নি। ভারতের কাছে আপত্তি তোলা হয়নি-কেন বাংলাদেশকে এই শুষ্ক মৌসুমে ধারাবাহিকভাবে কম পানি দেয়া হলো। যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) তথ্যানুযায়ি, ইতোপূর্বে ২০০৮ সালে ১১ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ওই দশদিনে ফারাক্কা পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন পানি পাওয়ার রেকর্ড ছিল ১৭ হাজার ৫১৯ কিউসেক।

চলতি শুস্ক মৌসুমে চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশ মাত্র চার বার ৩৫ হাজার কিউসেক করে গঙ্গার পানি পেয়েছে। এছাড়া ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দশদিনওয়ারি হিসাবে প্রতিটিতে বাংলাদেশ পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জেআরসি’র পরিসংখ্যান অনুযায়ি, চলতি শুষ্ক মৌসুমে (১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত) প্রতি দশদিনওয়ারি হিসাবে ১ থেকে ১০ জানুয়ারি পানি পেয়েছে ৩৫ হাজার কিউসেক, ১১ থেকে ২০ জানুয়ারি পেয়েছে ৩১ হাজার ৩৯৪ কিউসেক, ২১ থেকে ৩১ জানুয়ারি ৩১ হাজার ১৪ কিউসেক। ১ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি ২৯ হাজার ৭৩৩ কিউসেক, ১১ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি ২৮ হাজার ৮২০ কিউসেক, ২১ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পেয়েছে ২৬ হাজার ৮৬৫ কিউসেক পানি।

মার্চের প্রথম দশদিনে অর্থাৎ ১ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত পেয়েছে ২৫ হাজার ৪১৯ কিউসেক, ১১ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত পেয়েছে ৩৫ হাজার কিউসেক, ২১ থেকে ৩১ মার্চ এই দশদিনে বাংলাদেশ পেয়েছে ১৫ হাজার ৬০৬ কিউসেক পানি। যা স্মরণকালে সর্বনি¤œ রেকর্ড। ১ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত পানি পেয়েছে ৩৫ হাজার কিউসেক, ১১ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত পেয়েছে ১৮ হাজার ২৮২ কিউসেক এবং ২১ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পেয়েছে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে জেআরসি’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, এই চিত্র অত্যন্ত ভয়াবহ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই শুষ্ক মৌসুমে যেহারে গঙ্গার পানি বাংলাদেশ পেয়েছে, তা গঙ্গা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

তবে জেআরসি’র সাবেক সদস্য মীর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভারতে এবার প্রচন্ড খরা। এই পরিস্থিতিতে ফারাক্কা পয়েন্টে খুবই কম পানি জমা হয়েছে। যতটুকু পানি এসেছে সেটাই চুক্তি মোতাবেক ভাগ করে নিয়েছে উভয় দেশ।

পদ্মার বুকে চর

এদিকে, ফারাক্কা দিয়ে পানি না আসায় পদ্মা অববাহিকার সকল নদী মরা গাঙে পরিণত হয়েছে। বর্ষা দ্বারপ্রান্তে এসে গেলেও নদীতে সেভাবে পানি বাড়েনি। এখনও পদ্মা অববাহিকার নদীগুলোর যেদিকে চোখ যায় শৃুধু বালু আর বালু। পানি নিয়ে গত আট বছরের মধ্যে এমন দূর্যোগ আর কখনও দেখা দেয়নি। এই মরুময়তার জন্য পানি বিশেষজ্ঞরা ফারাক্কা বাঁধের ভয়াবহ প্রভাবকেই দায়ী করছেন। আর যৌথ নদী কমিশন বাংলাদেশ (জেআরসি) জানায়, ১৯৯৬ সালে দু’দেশের মধ্যে গঙ্গা চুৃক্তি স্বাক্ষরের পর এই প্রথম বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে সর্বনি¤œ পানি পাচ্ছে। যা চুক্তিপত্রের লঙ্ঘন।

যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ভারতকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তবে তারা বলছেন, ফারাক্কা পয়েন্ট পানি কম পাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি শুরু হলে পানি বাড়বে।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক ও পানি বিশেষজ্ঞ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ত্রিশ বছর মেয়াদি গঙ্গা চুক্তির ধারায় বলা আছে, ফারাক্কা পয়েন্টে পানির প্রবাহ কমে গেলে উভয় দেশ মিলে পানির প্রবাহ বাড়ানোর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ভারত এ বিষয়টিকে সব সময়ই পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উচিত এ বিষয়গুলো জোড়ালোভাবে ভারতের কাছে উপস্থাপন করা।

অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুৃমে পানির অভাবে বন্ধ হয়ে যায় দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১ লাখ একর সেচ সরবরাহ করার কথা থাকলেও পানির অভাবে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা সহ উত্তর-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে। আর বিস্তীর্ণ এ এলাকায় মরুকরণ প্রক্রিয়া তীব্রতর হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালের ৩০ জানুয়ারি ভারত ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে এবং ১৯৭০ সালে কাজ শেষ হয়। ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ফারাক্কা বাঁধের সবকটি গেট খুলে দিলে সেবারই মূলত চাহিদা অনুযায়ী পানি পেয়েছিল বাংলাদেশ। ১৯৭৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত চাহিদানুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বাংলাদেশের ইতিহাস শুধুই বঞ্চনার। অথচ ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের আগে শীতকালের শুষ্ক মৌসুমেও পদ্মা থেকে ৪০ হাজার কিউসেক পর্যন্ত পানি পাওয়া যেত।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com