২৪ ঘণ্টা পর লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা। সেই পাকিস্তান, যাদের ব্যাটিং ও বোলিং এখন টগবগ করে ফুটছে। দুরন্ত ফর্মে থাকা এই দলের বিপক্ষে কেমন করবে বাংলাদেশ? শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ আর নাসিম শাহর ফাস্টবোলিং তোড় সামলাতে পারবেন টাইগাররা?
এদিকে এবারের এশিয়া কাপের সুপার ফোরের এমন এক গুরুত্বপূর্ণ খেলার আগে হঠাৎ করেই সর্বনাশ নেমে এসেছে বাংলাদেশ শিবিরে। এবারের এশিয়া কাপে আর খেলতে পারবেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। হ্যামস্ট্রিং সমস্যায় মাঠের বাইরে ছিটকে পড়েছেন ফর্মের চূড়োয় থাকা এ বাঁহাতি টপ অর্ডার।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যে ম্যাচে বাকি ব্যাটাররা রান করতে ভুলেই গিয়েছিলেন, সে ম্যাচেও একদিক আগলে অনেকটা সময় লড়াই করে ৮৯ রানের দারুণ এক ইনিংস উপহার দেন শান্ত। আর আফগানদের সাথে বাঁচামরার লড়াইয়ে শান্তর ব্যাট থেকে আসে চোখ ধাঁধানো সেঞ্চুরি (১০৫ বলে ১০৪)।
এমন এক ইনফর্ম ব্যাটারের অনুপস্থিতিতে কতটা কি করতে পারবেন বাকিরা? জ্বর সেরে যাওয়ার পর গতকাল সোমবার উড়ে যাওয়া লিটন দাস ফর্মের চূড়ায় থাকা শান্তর অভাবটা পূরণ করতে পারবেন?
যাদের পেস বোলিংয়ে পুরে ছাই হয়েছে রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, বিরাট কোহলির সাজানো ভারতের টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটিং। সেই শাহিন শহ আফ্রিদির দুর্দান্ত গতি, বিধ্বংসী সুইং, হারিস রউফের বৈচিত্র্যময় বোলিং আর নাসিম শাহর তারুণ্যের ঝড় সামলাতে পারবেন লিটন?
প্রশ্নটা শুনে খানিক অবাক হয়েছেন হয়তো। পরিসংখ্যান বলছে, ব্যাটার হিসেবে লিটন এখনও নাজমুল হোসেন শান্তর চেয়ে ঢের এগিয়ে। তার ব্যাটিংশৈলী, টেকনিক অনেক সুবিন্যস্ত। সাজানো গোছানো। লিটনের ব্যাট অনেক বেশি সাবলীল। উইকেটের চারদিকে শটস খেলার সামর্থ্যও লিটনের বেশি।
সবচেয়ে বড় কথা, ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তর (২৯ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে ৮৩২ রান) তুলনায় লিটনের (৭২ ম্যাচে ৫ সেঞ্চুরি ও ১০ হাফসেঞ্চুরিসহ ২২১৩ রান) ট্র্যাক রেকর্ড অনেক বেশি সমৃদ্ধ। এবং পারফরমার হিসেবেও সবাই লিটনকে এগিয়ে রাখেন। তাহলে কেন এ প্রশ্ন?
কারণ একটাই, সাম্প্রতিক সময় লিটনের অফফর্ম। শান্ত রানে ছিলেন। তার শেষ ১১ ইনিংসে (৫৩, ২৫, ৭৩, ৪৪, ১১৭, ৩৫, ১২, ১, ১১, ৮৯ ও ১০৪) রান ৫৬৪। আর সেখানে লিটন শেষ ১৩ ম্যাচে (৭, ০, ০ , ২৬, ৭০, ৫০*, ০, ২১, ৩৫, ২৬, ১৩, ৫৩*) তিনবার আউট হয়েছেন শূন্য রানে। রান সাকুল্যে ৩০১।
ওপরের এ পরিসংখ্যানই বলে দেয়, শান্ত ছিলেন পুরো ছন্দে। বিপরীতে লিটনের ধারাবাহিকতায় কমতি যথেষ্ট। এবারের এশিয়া কাপে শান্ত প্রথম ম্যাচে ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতার মাঝে একাই মাথা তুলে দাঁড়িয়েছেন, পরের খেলায় আফগানদের বিপক্ষে ইচ্ছেমত শটস খেলে পৌঁছে গেছেন তিন অংকে।
এ আসরে ২ ম্যাচে শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে (৮৯ +১০৪) ১৯৩ রান। এমন এক ইনফর্ম ব্যাটারকে মিস করবে যে কোনো দলই। আর পাকিস্তানের দুর্দান্ত ও দুর্দমনীয় ফাস্টবোলিংয়ের সামনে শান্তর নির্ভরতার কথাই ভাবা হচ্ছে বেশি। তার অভাব বোধ হবেই। আর সেই অভাবটা ঘুচানোর দায়িত্ব থাকবে লিটনেরই কাঁধে।
ইনফর্মের লিটন ভয়ংকর। কিন্তু অফফর্মের লিটন কি পারবেন পাকিস্তানের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে? যদি পারেন, তবে হয়তো শান্তর অনুপস্থিতি চোখে পড়বে না। না পারলেই আফসোসটা বাড়বে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ