বাংলা৭১নিউজ, নাজিম বকাউল ফরিদপুর থেকে : ফরিদপুর-৪ আসন (ভাঙ্গা,সদরপুর ও চরভদ্রাসন) তিনটি উপজেলা নিয়ে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদ ঘেসে এ আসনটি গঠিত। এ আসনে ২৩ ইউনিয়ন রয়েছে তার মধ্যে ১০টি ইউনিয়ন চরাঞ্চলে হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব একটা ভাল নেই। প্রায় সাড়ে তিন লাক্ষ ভোটারের দাড়ে পৌছাতে অনেক পরিশ্রম হচ্ছে প্রার্থী গণদের। এই আসনটি বিগত দিনে বরাবর আওয়ামী লীগের দখলে ছিল।
গত নির্বাচনে ফরিদপুরের ৪টি আসনের মধ্যে এই একটি মাত্র আসনে নির্বাচন হয়েছিল। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়েছে এক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে। সেই থেকে এই আসনে আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। বর্তমানে তা আবার তিন ভাগের পথে। সম্প্রতি ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহিস্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের বিভক্ততে এবার শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বিএনপি। বিএনপির একক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।
তিনি হল কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি ও ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপি সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগের মাঠে রয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ তবে শেখ হাসিনার আত্মীয় ও বর্তমান এমপি নিক্সন চৌধুরী ও আওয়ামী লীগ বলে দাবী করেন। এলাকার ভোটারদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, এ আসনে মূল ভোটযুদ্ধ হবে ত্রিমুখী। বিএনপির একক প্রার্থী হওয়ায় এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল নেতা খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম ও আওয়ামীলীগের কাজী জাফরউল্লাহ্, বর্তমান এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ্। তিনিই দলের মনোনয়ন পেতে পারেন বলে মনেকরছেন ভোটাররা। তিনি নিয়মিত এলাকায় আসছেন গনসংযোগ করছেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করছেন। এই আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাটি হিসাবে তিনি ভাল অবস্থানে আছেন। গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছে মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী তিনি শেখ হাসিনার আত্মীয় বলে তিনিও আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে পারেন।
কাজী জাফরউল্লাহ্ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরী আওয়ামী লীগের একই ঘরানার লোক। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ভোট দু’ভাগ হচ্ছে অন্যদিকে কাজী জাফরউল্লাহ্ ছোট ভাই কাজী হেদায়েতউল্লাহ্ সাকলান ও প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক ফজলে সোবাহন শামীম বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে জোরে মাঠে নেমেছে সকল বিএনপির নেতা কর্মীরা তাদের একক প্রার্থী। এছাড়া খন্দকার সেলিম এলাকায় স্বচ্ছ ইমেজের মানুষ হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে। তৃণমূল থেকেই মাঠ তৈরী করছেন তিনি।
এই আসনে প্রচার-প্রচারনায়ও এগিয়ে রয়েছে তৃণমূণ নেতা ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি শিল্পপতী আলহাজ¦ খন্দকার ইকবার হোসেন সেলিম। তিনি বিএনপির একক প্রার্থী হওয়ায় ৩ উপজেলার সকল বিএনপি ওতার অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা তার সাথে রয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি এলাকার ছেলে তার বাড়ি ভাঙ্গা উপজেলা সদরে। তার এলাকায়ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
গত নির্বাচনেও তার প্রস্তুতি ছিল। বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ায় তার নির্বাচন করা হয়নি। পরে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন করে তার প্রমান দিয়েছে। এক উপজেলা হতে তিনি প্রায় ৩০ হাজার ভোট পেয়েছে। তিনি এবার বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী সব নেতাকর্মীরা তার সাথে রয়েছে। তিনি এক উপজেলা নির্বাচন করে বিএনপির পক্ষে যত ভোট পেয়েছে বিগত দিনে এ আসনে কোন বিএনপির মনোনিত প্রার্থীও এত ভোট পায়নি। তিনি যে ভাবে মাঠ তৈরি করছেন তার ভবিষ্যৎ জলজল করছেন।
এলাকার বিএনপির নেতারা মনে করেন ৩ উপজেলায় বিএনপিরও বেশ ভোট রয়েছেন। গত নির্বাচনে তারা না থাকায় তাদের সব ভোট স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে। এবার তারা নির্বাচন করলে তাদের ভোট বিএনপির মনোনিত প্রার্থী পাবেন।
মিষ্টভাসী সাদালাপি নেতা হল খন্দকার সেলিম তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি দীর্ঘদিন মানুষের পাশে থেকে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকায় তিনি সমাজিক কর্মকান্ড করেন দলমতের উর্দ্ধে উঠে। তিনি মসজিদ গড়েন-মন্দিরে অর্থদেন। এলাকার যে কোন প্রান্তে কারো ঘরবাড়ি আগুনে পুড়লে সেখানে হাজির হন সেলিম। বসতবাড়ি নির্মানে সহায়তা করেন।
নির্বাচনী এলাকার মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে লেগে আছে তার হাতের ছোয়া। এলাকার বিপন্ন মানুষের পাশে দাড়ান তিনি আপনজনের মত। ইতিমধ্যেই নির্বাচনী এলাকায় কর্মী বান্ধব নেতার খ্যাতি পেয়েছেন তিনি। তিনি নিমিত এলাকায় আসছেন গনসংযোগ করছেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করছেন।
দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম বলেন, দেশে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে। আর সাধারণ ভোটারা ভোট দিতে পারলে সারা দেশে বিএনপি’র প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয় লাভ করবে।
দেশের জনগন ভোট দিতে পারলে ভোটের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাবে। তিনি আরও বলেন, ৩টি উপজেলায় যে পরিমানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা রয়েছে তারা সবাই আমার সাথে রয়েছে। দলীয় মনোনয়ন পেলে আমাকে জনগন তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। এ ব্যপারে জনগনের প্রতি আমার শতভার আস্থা রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস