বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: তোমার ঈমানকে খাঁটি করো
ঈমানের প্রথম শর্ত হলো, মহান আল্লাহকে একমাত্র রব ও রাসুল (সা.)-কে তাঁর প্রেরিত শেষ ও শ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া। যদি কেউ এর কোনো একটি অস্বীকার করে, তবে সে মুসলিম থাকতে পারে না। তারা কঠিন কিয়ামতের দিন রাসুল (সা.)-এর সুপারিশের ভাগীদার হবে না। কারণ রাসুল (সা.)-এর সুপারিশ পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো ঈমান।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কিয়ামতের দিন আপনার সুপারিশ লাভের ব্যাপারে কে সবচেয়ে অধিক সৌভাগ্যবান হবে? আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ‘আবু হুরায়রা! আমি মনে করেছিলাম, এ বিষয়ে তোমার আগে আমাকে আর কেউ জিজ্ঞেস করবে না। কেননা আমি দেখেছি হাদিসের প্রতি তোমার বিশেষ লোভ রয়েছে। কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত লাভে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান হবে সেই ব্যক্তি, যে একনিষ্ঠ চিত্তে বলে—আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোনো ইলাহ নেই।’ (বুখারি, হাদিস : ৯৯)
যারা একনিষ্ঠ চিত্তে আমৃত্যু মহান আল্লাহর ওপর ঈমান রাখবে ও তাঁর রাসুল (সা.)-কে শ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হিসেবে স্বীকার করবে, মহান আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেবেন। মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যেকোনো ব্যক্তি সর্বান্তঃকরণে এ সাক্ষ্য দিয়ে মারা গেল, ‘আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নাই এবং আমি আল্লাহর রাসুল’, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৭৯৬)
এখানে সাক্ষ্য দিয়ে মারা যাওয়ার অর্থ হলো, আমৃত্যু মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর ওপর ঈমান রাখা। এবং ঈমান নিয়ে মৃত্যু বরণ করা। আজীবন আল্লাহ প্রদত্ত কোরআন ও রাসুল (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক আমল করবে। যারা এমনটি করতে পারবে, মহান আল্লাহ জাহান্নাম তাদের জন্য হারাম করে দেবেন।
উবাদা ইবনে সামিত (রা.) মৃত্যুশয্যায় থাকাকালে সুনাবিহি (রহ.)-কে বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে যে আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নাই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল, তার জন্য আল্লাহ তাআলা জাহান্নামকে হারাম করে দেবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৬৩৮)
ঈমানের পরিচয়
ঈমান খাঁটি করতে হলে আমাদের ঈমানের পরিচয় জানতে হবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ঈমান হচ্ছে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ, রাসুলগণ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং ভাগ্যের ভালো-মন্দের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা (যে সব কিছু আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়)। (মুসলিম, হাদিস : ১) এগুলো হচ্ছে ঈমানের মৌলিক বিষয়। এ ছাড়া ঈমানের আরো বহু শাখা-প্রশাখা রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ঈমানের শাখা ৭০টিরও কিছু বেশি অথবা ৬০টির কিছু বেশি। এর সর্বোচ্চ শাখা হচ্ছে (আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোনো ইলাহ নেই) এ কথা স্বীকার করা, আর এর সর্বনিম্ন শাখা হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। আর লজ্জা ঈমানের একটি বিশেষ শাখা। (মুসলিম, হাদিস : ৬৯)
কেননা সব কিছুর মূলে হলো ঈমান। যদি ঈমান ঠিক না থাকে, তাহলে অন্যান্য আমলও নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আমাদের উচিত, আমাদের ঈমানকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করা। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়ার তাওফিক দান করুন।
বাংলা৭১নিউজ/এইচএম