বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: মিয়ানমারের বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এস২-এজিকিউ-বোমবার্ডিয়ার ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজটি প্রায়ই নষ্ট হতো! এ পর্যন্ত কয়েকবার বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় বিমানের এই এজিকিউ। এয়ারক্রাফটটি অপারেশনের উপযোগী না হলেও প্রতিদিন চার-পাঁচটি রুটে চলাচল করতো বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ৬ মার্চ হায়দারাবাদ থেকে সি-চেক (বড় ধরনের মেরামত) সেরে দেশে আসার পথেই এয়ারক্রাফটটির ইঞ্জিনের ওপরে থাকা ব্ল্যাংকেট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ফলে ইঞ্জিন অস্বাভাবিক উত্তপ্ত হয়ে পড়ে এবং ইঞ্জিন অয়েল বিপজ্জনক মাত্রায় চলে আসে। তখন আকাশেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কিন্তু অল্পের জন্য রক্ষা পায় সেদিন। যদিও বিমানটিতে ওই সময় কোনো যাত্রী ছিল না। সেদিন এয়ারক্রাফটটির নিউমেটিক লাইনের পাইপে ক্ল্যাপ খোলা ছিল। যে কারণে, অয়েল লিক করায় এই সমস্যা হয়।

ওই ঘটনার দুই মাস না যেতেই বুধবার আবারও দুর্ঘটনার কবলে পড়ল বিমানের এজিকিউ। যদিও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। জরাজীর্ণ এই এয়ারক্রাফট বুধবার বিকেলে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। বিমানটিতে পাইলটের দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন শামিম নজরুল। মিয়ানমারের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২২মিনিটে দেশটির ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দরের রানওয়েতে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

বিমানটিতে পাইলট ও কেবিন ক্রুসহ মোট ৩৪ জন আরোহী ছিলেন। ৩০ জন আরোহীর মধ্যে একজন শিশু, পাইলট ও কেবিন ক্রু ছিলেন আরও চারজন। তাদের মধ্যে আহত ১৯ জনকে ইয়াঙ্গুনের নর্থ ওকলাপা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১১ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।

মিয়ানমার থেকে ১৭ জন যাত্রী নিয়ে দেশে ফিরেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ একটি ফ্লাইট। বৃহস্পতিবার (৯ মে) ভোর ৫টা ৩ মিনিটে ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

জানা গেছে, গত ৬ মার্চ ব্ল্যাংকেট পুড়ে যাওয়ার পর কানাডা-বোম্বায়ডিয়ার কোম্পানির প্রতিনিধিরা এসে এস২-এজিকিউ-বোমবার্ডিয়ার ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজটিকে চলাচলের ঘোষণা দিলে বিমান আবার সেটিকে অপারেশনে নিয়ে আসে। তার দুই মাসের মধ্যেই বিধ্বস্ত হলো সেটি। এটি আর বহরে ফিরে আসতে পারবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি এয়ারক্রাফটটিকে ভারতের হায়দারাবাদের ‘জিএমআর অ্যারো টেক কোম্পানি’তে পাঠানো হয় ‘সি-চেক’ (বড় ধরনের মেরামত) করানোর জন্য। ১৫ দিনে ‘সি-চেক’ শেষ করার কথা থাকলেও সময় লাগে প্রায় দেড় মাস। আবার সমস্যা সারানোর বদলে নতুন সমস্যা তৈরি করে এয়ারক্রাফটটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর ‘জিএমআর অ্যারো টেক কোম্পানি’র সি-চেকের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বলেন, কিছুদিন আগে হায়দারাবাদ থেকে সি-চেক সেরে দেশে ফেরার পথে আকাশে বিকল হওয়া এয়ারক্রাফটিকে কেন অপারেশনে রাখা হচ্ছে- তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে পরিস্থিত বুঝে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি করা হবে।

তিনি বলেন, আগামীতে বিমানবহরে লিজের নামে নিম্নমানের উড়োজাহাজ যোগ করা বন্ধ করব।

বাংলা৭১নিউজ/এলএ.এফএ