স্বাভাবিকের চেয়ে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে খুলনায় সন্তান প্রসবের হার বেড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রসববেদনা এড়ানো, স্বাভাবিক প্রসবের সময় সৃষ্ট জটিলতায় না ভুগতে চাওয়া এবং ক্লিনিকগুলোর দালালদের কারণেই মূলত সিজারের হার বেড়েছে। তবে সিজারিয়ান অপারেশনের প্রতি শহুরে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীদের ঝোঁকই বেশি। এতে মৃত্যুঝুঁকি অনেক কমে যায় বলে তাদের ধারণা।
খুলনার একাধিক চিকিৎসক, ক্লিনিক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনার সময় যাতায়াতের সমস্যার কারণে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে সিজারিয়ান অপারেশন কম হয়েছে। তবে এখন এই হার আবার আগের জায়গায় ফিরে এসেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনার একাধিক গাইনি চিকিৎসক জানান, একটা সুস্থ দেহে কোনো ধরনের কাটাছেঁড়া করা হলে তার রেশ কখনোই শেষ হয় না। নানা জটিলতায় ভুগতে হয় মাকে। তাই চেষ্টা করা হয় স্বাভাবিকভাবেই যেন সন্তান প্রসব হয়।
কিন্তু মানবদেহের নানা জটিলতার কারণে অনেক সময় স্বাভাবিক প্রসব করানো সম্ভব হয় না। অনেক সময় মায়ের নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায় গর্ভের সন্তানও জটিল অবস্থানে রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে তারা সিজারিয়ান অপারেশন করাতে বাধ্য হন।
চিকিৎসকরা আরও বলেন, শহরের মানুষরা এখন অনেক সচেতন। ফলে গর্ভধারণের সময় থেকেই গর্ভবতী মায়েরা চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। কোনো সময় জটিলতা দেখা দিলেও চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে যান। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে নারীরা এখনও চিকিৎসাকেন্দ্রে আসতে চান না, পরামর্শও নেন না।
ফলে গর্ভধারণের পর কোনো জটিলতা সৃষ্টি হলে তা সারিয়ে তোলা যায় না। তারা এমন সময় চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হন, যখন বাঁচা-মরার লড়াই শুরু হয়। তখন অপারেশন না করে কোনো উপায় থাকে না।
দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আমিনা বলেন, রোগীরা আগের মতো ব্যথা সহ্য করতে চান না। তাদের ইচ্ছাতেই সিজার করানো হয়।
খুলনার সিভিল সার্জন নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনা জেনারেল হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের সংখ্যাই বেশি। এখানে যেসব রোগী আসেন তারা খুব জটিল অবস্থায় থাকেন। ফলে অপারেশন ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। তবে চিকিৎসকদের সবসময় চেষ্টা থাকে যেন স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করানো যায়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ