বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:৫৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য ৯৪০ প্রশ্ন ভরিতে আরও ১৮৭৮ টাকা কমলো সোনার দাম সব প্রার্থী আমাদের কাছে সমান: ইসি আলমগীর টোল আদায়ে দুর্নীতি, দুদকের হস্তক্ষেপে ইজারা বাতিল রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে আছে ইউরোপ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : কাদের এপ্রিলে নির্যাতনের শিকার ১৯৩ নারী-শিশুকন্যা ৯ মে পর্যন্ত চলবে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মৃত ব্যক্তিদের জাল সনদ: মিল্টন সমাদ্দারের ৩ দিনের রিমান্ড গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয়, উন্মুক্ত : তথ্য প্রতিমন্ত্রী যাত্রীবাহী বাস থেকে ৭টি স্বর্ণের বারসহ চোরকারবারি আটক আমন মৌসুম থেকেই চাল ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধ করা হবে : খাদ্যমন্ত্রী টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১০ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণের অভিযোগ আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে শনিবার থেকে খোলা স্কুল-কলেজ: শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইসলামী ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা জমা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো ৪৯ টাকা শেয়ার ছাড়বে রূপালী ব্যাংক নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

‘প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় কলঙ্কজনক অধ্যায় তৈরি হয়েছে’

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
  • ১৩০ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বর্তমানে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস মহামারি আকার ধারণ করেছে। শিক্ষাব্যবস্থায় এ ঘটনা কলঙ্কজনক অধ্যয় তৈরি করেছে। অথচ এমন ন্যাক্করজনক ঘটনার পরও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মধ্যে কোনো ব্যর্থতার ছাপ দেখা যায়নি। তাদের কাছে এটি একটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের আয়োজনে এক গোলটেবিল অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এমন কথা বলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক শফি আহমেদ।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা একটি কলঙ্কজনক অধ্যয় সৃষ্টি করেছে। দিনের পর দিন ফাঁসের ঘটনার পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। গত নভেম্বরে প্রথম শ্রেণির প্রশ্নও ফাঁসের খবর বেরিয়েছে। এটি একটা সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এখন আগাম ঘোষণা দিয়ে প্রশ্ন ফাঁস করা হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিরোধ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
শফি আহমেদ বলেন, যেহেতু শিক্ষানীতি জাতীয় সংসদে অনুমোদিত একটি দলিল। তাই এটি বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু তেমন কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। একটি বাস্তবায়ন কমিটি করা হলেও তার কোনো কাজ নেই। শিক্ষানীতি সাত বছর ধরে কাগজে-কলমেই আছে। এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটা বড় ব্যর্থতা।
অনুষ্ঠানে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা পেতে একজন করে প্রাথমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের ছাত্রীর বক্তব্য উপস্থাপনের ব্যবস্থা রাখেন আয়োজকরা।
বক্তৃতায় বুয়েট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, আমাদের দেশে মেধাবীর কোনো অভাব নেই। অভাব আছে যোগ্য নেতৃত্বের। সাম্প্রতিক ঘটনায় শিক্ষাব্যবস্থার ভবিষ্যৎ শুভকর বলে মনে হচ্ছে না। এদেশে শিক্ষকদের চেয়ে ট্রাকচালক সমিতির গুরুত্ব বেশি। শিক্ষকদের এখানে গুরুত্ব নেই। অথচ বলা হয়, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, শিক্ষাব্যবস্থায় অব্যবস্থাপনা চলছে। দেশে ১১ ধরনের প্রাথমিক শিক্ষা রয়েছে। একমুখি শিক্ষাব্যবস্থার জন্য কোনো সরকার উদ্যোগ নেয়নি। বর্তমানে শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণের যে বান ডেকেছে সে জোয়ার থামছে না। এ জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। হেফাজতের পরামর্শ নিয়ে শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হয়েছে। এ সাম্প্রদায়িকীকরণও রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এটা দেশের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করছে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মাহবুবা হোসেন বলেন, বর্তমানে কম পড়ে, কোচিং করে ও গাইড বই থেকে পড়ে পাস করার প্রবণতা চলছে। শিক্ষা অর্থের বিনিময়ে বিক্রি হয়। পরীক্ষার খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন হয় না। নিম্নমানের ও দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে আমরা আছি। শিক্ষা যদি জাতির মেরুদণ্ড হয়, তাহলে এই শিক্ষাব্যবস্থায় মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে একসময়ে ভেঙে যাবে। আমরা এমন শিক্ষাব্যবস্থা চাই যেখানে প্রশ্ন ফাঁস হবে না, নকল হবে না। কর্মমুখী ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা চাই। যে শিক্ষায় আচরণের গুণগত পরিবর্তন হবে সেই শিক্ষা চাই। বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থায় তা হচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্রী সামিয়া ইসলাম নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, আমি শহরের স্কুলে লেখাপড়া করেছি। সকাল ৮টায় শিক্ষকের বাসায় কোচিংয়ের মাধ্যমে দিন শুরু হতো। পরপর দুটি বাসায় পড়ে সকাল ১০টায় থেকে ৫টা পর্যন্ত স্কুলে কাটতো। এই সময়ে নাস্তা ও দুপুরের খাবার বাইরে খেতে হতো। বিকালে ফেরার পর আবার বাসায় টিউটর আসতো। আমাদের কোনো শৈশব বা কৈশরের উপলব্ধি ছিল না।
তিনি বলেন, পূর্ব কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষায় একের পর এক নতুন নতুন পদ্ধতি চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। একবার গণিত সৃজনশীল চালুর পর প্রথম পরীক্ষায় আমার ক্লাসের ৬০ জনের মধ্যে ৫০ জনই ফেল করলো। পরে শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ার পর দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় সবাই পাস করলো।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরা গাইড বই থেকে পড়ান ও প্রশ্ন নেন। আমাদেরকেও পরোক্ষভাবে জানিয়ে দেয়া হতো তিনি কোন গাইড অনুসরণ করেন। আমরাও সেটা অনুসরণ করে উৎরায়ে এসেছি। শিক্ষকদের গাইড বই অনূসরণ না করতে নতুন ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারিক আলী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, শিক্ষক নেতা শরীফুজ্জামান আগাখাঁন, হেনা রানী রায় প্রমুখ।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com