বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, রাজধানীতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে সাড়ে ৫ হাজার ভবন। আজ রাজউক চাইলেই তা ভাঙা অসম্ভব। সাধারণ নাগরিকরা বিশ্বাসও করে না এই অবৈধ ভবন ভেঙে রাজউক নতুন শহর উপহার দেবে। কিন্তু রাজউক একটা কাজ করতেই পারে যে, প্রতীকী অর্থে প্রমাণ করে দিক একজন সর্বোচ্চ প্রভাবশালীর দ্বারা অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ভবনটি ভেঙে ফেলুক। তাহলেই বুঝবো রাজউকের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা রয়েছে।
রোববার রাজধানীর কলাবাগানের ইয়াকুব সাউথ সেন্টারে স্টেট ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘অগ্নিকাণ্ড : কারণ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, সচেতনতা সবার জন্যই। সমাজের অনেক মানুষ রয়েছে শিক্ষিত দামি গাড়িতে ঘুরছে। কিন্তু অসচেতন মনে পানির বোতল, ব্যবহৃত টিস্যু রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিচ্ছেন। শিক্ষিত মানুষের মধ্যে যদি বোধ খুঁজে না পাই তাহলে অর্ধশিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত মানুষকে দোষ দিয়ে কি লাভ?’অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রে সচেতনতার বিকল্প নেই বলে জানান মেয়র। তিনি বলেন, ‘চুরিহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের পর সবাইকে সচেতন হবার অনুরোধ জানানো হয়। সবাই আগ্রহীও হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে কেমিক্যাল সরাতে বলা হয়। এরপর কিন্তু আরও একটি আগুনের ঘটনা ঘটেছিল। প্রস্তুতি থাকায় বড় ধরনের কিছু ঘটেনি। এজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।’
‘দ্বিতীয় যে হারে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, ভৌত অবকাঠামো বেড়েছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেবামূলক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সেবা বাড়েনি। সক্ষমতা বাড়েনি। এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনও বাইরে নয়। গত ৪ বছরে একটি বিষয় খুব পীড়া দিয়েছে। মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষকে সেবা দেয়ার মতো জনবল আমাদের রয়েছে’- বলেন মেয়র।আমলাতান্ত্রিক জটিলতার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র খোকন বলেন, ‘অধিকতর সেবা ও সেবার মান বৃদ্ধি এবং সেবা সর্বস্তরে পৌঁছে দিতেই ২০১১ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন বিভক্ত করা হয়। গত ৪ বছরে আমি চেষ্টা করেও ৬০ শতাংশ জনবলের অভাব পূরণ করতে পারিনি। কারণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। আজ ২০১৯ সাল চলছে, আশ্চর্য হলেও এটাই সত্যি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আমাদের সে জনবলের বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে।’
মেয়র বলেন, ‘চুরিহাট্টায় আগুনের পর বলা হলো, সিটি কর্পোরেশন কেন মামলা করব না। যৌক্তিক কথা। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের ক্ষমতায় সেটা নেই। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা ও দোকান করার কারণে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারে সিটি কর্পোরেশন, মামলা করতে পারে না।’সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘আমাদের সেবা দানের ক্ষেত্রে সবগুলো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় নেই। সময় এসেছে সবাই বসে সমন্বয় করা। সচেনতা বৃদ্ধি করা। তবেই সম্ভব ঘুরে দাঁড়ানো।’
গোলটেবিল আলোচনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেইন্যান্স) মেজর শাকিল নেওয়াজ, বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের প্রধান ড. নাসরিন হোসাইন, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মফিজুর রহমান, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ইয়াসির আরাফাত খান, বাংলাদেশ অ্যাসিড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ পলাশ, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. কামরুজ্জামান মজুমদার, এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, ঢাবির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসান হাবিব সানা, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এসড