দেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী প্রতিনিধিদলের বৈঠক করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। বুধবার (১২ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিনিধিদলটির সিডিউলে প্রধান বিচারপতি তথা সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে বৈঠক করার কথা উল্লেখ ছিল।
এদিকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আজ বুধবার বিকেল ৩টার দিকে ইইউ প্রতিনিধিদল বৈঠকে বসবে বলে জানা গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম ইউরোপ ও ইইউ অনুবিভাগের সিডিউলের স্মারকে বলা হয়েছে, ঢাকাস্থ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশন অনুসন্ধানী মিশনটির বাংলাদেশে অবস্থানকালে ১০ থেকে ১২ জুলাই নিম্নলিখিত মন্ত্রণালয়/বিভাগ/প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
সিডিউলের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর, পুলিশ অধিদপ্তর, সুপ্রিম কোর্ট (প্রধান বিচারপতি), জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
গতকাল মঙ্গলবার (১১ জুলাই) উচ্চ আদালতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার সঙ্গে যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক-নির্বাচনী প্রতিনিধিদলের বৈঠক চলছিল তখন বাইরে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে বের হওয়ার সময় বাধার মুখে পড়েন ইইউ প্রতিনিধিদল। পথরোধ করে বিক্ষোভ করায় সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েও থাকে প্রতিনিধিদলটি।
এসময় বিক্ষোভকারীদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করে ইইউ প্রতিনিধিদল। কিন্তু সে অনুরোধে কর্ণপাত করেননি বিক্ষোভকারীরা। পরে পুলিশি পাহারায় বের হয়ে গাড়িতে ওঠেন চার সদস্যদের প্রতিনিধিদল। তখন গাড়ির সামনে দাঁড়িয়েও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
বিএনপিপন্থি আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, এ সরকার তত্ত্বাবধায়ক দিয়ে নির্বাচন করতে চায় না। ভোটকেন্দ্র দখল করে নির্বাচন করতে চায়। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দরকার।
বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের এমন নজিরবিহীন আচরণ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন।
নির্বাচনে প্রার্থীদের অংশগ্রহণ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের ভূমিকার বিষয়টি ইইউ প্রতিনিধিদল জানতে চেয়েছে। ঋণখেলাপি ও সাজাপ্রাপ্তদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান এ আইন কর্মকর্তা।
বৈঠক শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, ওনারা (প্রতিনিধিদল) নির্বাচনী আইন সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেছেন। নির্বাচনকালীন আরপিও আইন, ফৌজদারি আইন ও দেওয়ানি আইন এবং নাগরিকদের অধিকারের যে আইনগুলো আছে সেগুলো সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশের সাধারণ আইনগুলো সম্পর্কেও জানতে চেয়েছেন তারা।
ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচনী আইনসহ বিভিন্ন আইন সম্পর্কে জানতে চায় ইইউ প্রতিনিধিদল।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি