বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে গতকাল শুক্রবার বিকেলে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে দেখা করে দোয়া নিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন ৫৮ মিনিট। মীর নাছির ছিলেন ১০ মিনিট। হেফাজতের আমির এই মাদ্রাসার মহাপরিচালক। তবে সাক্ষাতের সময় হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী ছিলেন না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাতের বিষয়টি পূর্বনির্ধারিত হলেও হেফাজতে আমিরের সঙ্গে বিএনপির নেতার সাক্ষাতের ঘটনাটি ছিল আকস্মিক। একই দিনে সরকার ও বিরোধীপক্ষের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দুই নেতার সাক্ষাতের সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগসূত্র নেই বলে হেফাজত নেতারা জানান। তবে এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাটহাজারী মাদ্রাসায় যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মনির-উজ-জামান, র্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা। সাংসদ নদভীর সঙ্গে কওমি মাদ্রাসার আলেমদের সুসম্পর্ক রয়েছে। কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজত।
একই দিনে দুই নেতার দেখা করার বিষয়ে হেফাজতের আমিরের ছেলে আনাস মাদানী বলেন, রাজনৈতিক কোনো আলোচনা হয়নি। হেফাজত রাজনৈতিক সংগঠন নয়। আমিরের সঙ্গে দেখা করতে সব দলের নেতারা আসেন।
এদিকে মাদ্রাসা থেকে বের হওয়ার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, হেফাজতের আমির অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে দেখতে এসেছেন। তাঁর কাছ থেকে দোয়া নিয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি।
আগামী নির্বাচনকে ঘিরে হেফাজতের আমিরের কাছে কোনো বার্তা নিয়ে এসেছেন কি না, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। ৮ ফেব্রুয়ারিকে খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে হেফাজতকে কী বলেছেন, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিচার আইন মেনে করা হচ্ছে। রায়ে যা হবে তা কার্যকর হবে। এই রায় নিয়ে বিশৃঙ্খলা করার সুযোগ নেই। এখানে এসেছেন হুজুরের (হেফাজত আমির) দোয়া নিতে।
হেফাজতের নেতারা বলেন, মাদ্রাসায় অবস্থান করার সময় মন্ত্রী দাওরায়ে-ই-হাদিসের (কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর) শ্রেণিকক্ষে যান। শিক্ষার্থীদের কী কী পড়ানো হয়, তা জানতে চান। এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি জসীম উদ্দিন মন্ত্রীকে হাদিস ও ফতোয়া বিভাগ সম্পর্কে বর্ণনা দেন।
হেফাজত নেতারা বলেন, দাওরায়ে-ই-হাদিসকে স্নাতকোত্তর স্বীকৃতি দেওয়ার পর এখন তা জাতীয় সংসদে পাস করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন হেফাজত আমির। মন্ত্রী সংসদে বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করা হবে বলে তাঁকে আশ্বস্ত করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদ্রাসা থেকে বিকেল ৫টা ১৮ মিনিটে বের হওয়ার ১০ মিনিট পর হেফাজতের আমিরের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর কক্ষে যান বিএনপি নেতা মীর নাছির। সাক্ষাৎ শেষে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় রায় দেবে সরকার। তাই হুজুরের (হেফাজত আমির) কাছে দোয়া চেয়েছি। হুজুর দোয়া করেছেন।’
বাংলা৭১নিউজ/সংগৃহিত: প্রথমআলো/এসএস