আর্থিক প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে হাতে নগদ সোয়া কোটি টাকার বেশি আছে। অথচ সশরীরে গুণে পাওয়া গেছে ১৮ হাজার টাকারও কম। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এমবি ফার্মাসিউটিক্যালসের আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করে এমন তথ্য দিয়েছে নিরীক্ষক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নিরীক্ষকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিএসই জানিয়েছে, এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস ২০২০-২১ হিসাব বছরের আর্থিক হিসাবে হাতে নগদ দেখিয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৫ টাকা। তবে সশরীরে কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে ১৩ হাজার ৫৪৮ টাকা এবং কারখানায় ৪ হাজার ৩৫৭ টাকা পাওয়া গেছে।
অর্থাৎ গণনা করে এমবি ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছে নগদ পাওয়া গেছে ১৭ হাজার ৯০৫ টাকা। এ হিসাবে আর্থিক প্রতিবেদনে দেখানো ১ কোটি ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৫ টাকার মধ্যে ১ কোটি ২৭ লাখ ৭৮ হাজার ৪৮০ টাকার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
নগদ অর্থের বিষয়ে আজগুবি তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডেও অনিয়ম করেছে বলে অভিমত দিয়েছে নিরীক্ষক। এই ফান্ডের অর্থ বিতরণে অনিয়ম করে কর্মীদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
নিরীক্ষকের অভিমতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে এমবি ফার্মাসিউটিক্যালসের শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে ৯৯ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৬ টাকা রয়েছে। এর মধ্যে আগের হিসাব বছরের (২০১৯-২০) ৯১ লাখ ২৭ হাজার ৩৬৩ টাকা রয়েছে। ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ী, হিসাব বছর শেষ হওয়ার ৯ মাসের মধ্যে ফান্ডের অর্থ বিতরণ করতে হয়।
আর্থিক প্রতিবেদনে গোজামিল দেওয়া এমবি ফার্মার শেয়ার নিয়ে শেয়ারবাজারে কারসাজি হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে (২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত) বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ না দেওয়া প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দাম এখন ৪৬৪ টাকায় অবস্থান করছে। গত সেপ্টেম্বরে শেয়ারের দাম ৬৩৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
এদিকে চলমান হিসাব বছরেও কোম্পানিটি খুব ভালো ব্যবসা করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর- এই ছয় মাসের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৩৪ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৩৫ পয়সা। আর ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ৯২ পয়সা।
১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এমবি ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ মাত্র ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২৪ লাখ। এর মধ্যে ৭৭ দশমিক ২৫ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ১৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ার।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ