প্রচণ্ড ঝড়ের পর ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে আর্জেন্টিনার একটি শহর। টানা আট ঘণ্টার মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পর সৃষ্ট এই বন্যায় কমপক্ষে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগের কারণে রাস্তাঘাট ও সেতু ধ্বংস হয়ে গেছে।
শহরের বেশিরভাগ অংশ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে এবং ১১০০ জনেরও বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। রোববার (৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আর্জেন্টিনার বন্দরনগরী বাহিয়া ব্লাঙ্কায় মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পর বন্যায় কমপক্ষে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আট ঘণ্টার একটানা বৃষ্টিপাতে অনেক রাস্তাঘাট ও সেতু ধ্বংস হয়ে গেছে, ভবন প্লাবিত হয়েছে এবং শহরের বেশিরভাগ অংশ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
এছাড়া ১১০০ জনেরও বেশি মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে হয়েছে এবং নবজাতক শিশুদেরও হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে শনিবার শহরের কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, তারা হেলিকপ্টার, অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি খাবার ও পানীয় পাঠাচ্ছে, অন্যদিকে উপকূলরক্ষী বাহিনী উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত শুক্রবার বাহিয়া ব্লাঙ্কায় ৪০০ মিমি (১৫.৭ ইঞ্চি) এরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। শহরে সাধারণত বছরে প্রায় ৬০০-৬৫০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবিতে বন্যার পানিতে গাড়ি ভেসে যেতে দেখা যাচ্ছে। ৩ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি জনসংখ্যার শহর বাহিয়া ব্লাঙ্কা, বুয়েনস আইরেস প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি প্রধান বন্দরনগরী।
প্রাদেশিক সরকারের মন্ত্রী কার্লোস বিয়ানকো স্থানীয় রেডিওকে বলেছেন: “আমাদের শহরটি পুনর্নির্মাণ করতে হবে। এমন কিছু মানুষ আছে যারা সবকিছু হারিয়েছেন।”
পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শুক্রবারের এই বৃষ্টি এবং ঝড়ের ফলে বন্যার পানিতে চার এবং এক বছর বয়সী দুই শিশু ভেসে গেছে বলে জানা গেছে। এখনও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এছাড়া আকস্মিক বন্যায় হাসপাতাল প্লাবিত হয়েছে। আশপাশের এলাকাগুলো দ্বীপে পরিণত হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
মেয়রের কার্যালয় জানিয়েছে, রাজধানী বুয়েনস আইরেস থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই শহরে আরও অনেকের হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচজন বন্যার পানিতে ডুবে থাকা সড়কে মারা গেছেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ