বাংলা৭১নিউজ,(ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি: এক সময়ের খরস্রোতা দর্শা নদী কালের আবর্তনে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এলাকার কতিপয় সুযোগ সন্ধানী মানুষ নদীর গর্ভের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। শুধু তাই নয় এই নদীটি এখন ময়লা ফেলার ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ হচ্ছে দূষিত। ভারত থেকে বয়ে আসা দর্শা নদীটি পৌর শহর দিয়ে আলীশাহ বাজার হয়ে কংশ নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। বছরের বেশীরভাগ সময় নদীতে পানি পাওয়া যায় না।
এক সময় এই নদীর ওপর নির্ভরশীল ছিল এই এলাকার মানুষ। এই নদীটি ছিল ব্যবসা বাণিজ্য ও যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নদী পথে নারিকেল, ধান, আলুসহ নানা কৃষি পণ্য আসত হালুয়াঘাট সদরে। এক কথায় নদী ঘিরেই ছিল এখানকার কৃষি, অর্থনীতি, যোগাযোগ ও সংস্কৃতি। উত্তর বাজারে গোরস্থান সংলগ্ন নৌ-ঘাট এখনো তার সাক্ষ্য বহন করে।
এলাকার বৃদ্ধ আমজত আলী, রমিজ উদ্দিন, আফসর আলীসহ অনেকে বলেন, বছর ত্রিশ আগেও উত্তর বাজারের এই ঘাটে নৌকা দিয়ে কৃষি পণ্য আনা নেওয়া হতো। আমরা এই নদীতে মাছ ধরেছি। নদীর উপর নির্ভর ছিল অসংখ্য জেলে পরিবার। এই নদীর পানি দিয়েই চলত নদী পাড়ের কৃষকের চাষাবাদ। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে নদীটি খনন বা সংস্কার না হওয়ায় পলি ধোয়া নেমে ভরাট হয়ে উঠেছে। বর্ষাকালে নদীতে পানির দেখা মিললেও বর্ষা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যায় নদীর পানি। যার ফলে নদী এলাকার কৃষিকাজ এখন সেচ পাম্পের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
হালুয়াঘাট পৌর মেয়র খাইরুল আলম ভূঞা বলেন, পৌর শহর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই নদীটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পৌর মেয়র হিসেবে আমি দাবি জানাই নদীটি যেন খনন করে এর নব্যতা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ ব্যাপারে হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আমি কয়েকবার নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছি। আমি ইতিমধ্যেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেছি। তাদের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিলো। নদীটি এই এলাকার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি খনন করা হলে অনেক সুফল পাওয়া যাবে।
বাংলা৭১নিউজ/এফএ