বাংলা৭১নিউজ, আফতাব হোসেন, চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর পৌর শহরের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আলেপা খাতুন বিড়ালের প্রতি বালবাসায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যর সৃষ্টি করেছে। পৌর বাসীর কাছে তিনি ‘বিড়ালের মা আলেপা’ নামে পরিচিত। পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই আলেপা খাতুন ৪২টি বিড়ালকে পরম মমতায় সন্তানের মতো আগলে রেখেছেন।
সকাল হলেই থরে থরে থালায় সাজানো মাছ-ভাত, বাটিতে রাখা দুধ-এ যেন সন্তানের প্রতি মায়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য। বিড়ালগুলি অসুস্থ হলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া, সময়মতো ওষুধ খাওয়ানো সবকিছুই আলেপা খাতুনকে সামলাতে হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির পাশে জঙ্গলে, টিনের চালে, ঘরের বিছানায় শুয়ে আছে বিড়ালগুলো। একে একে নাম ধরে ডাকতেই সবগুলো এসে হাজির। কেউ আলেপার কোলে চড়ছে আবার কেউবা কোলে ওঠার জন্য শাড়ির আঁচল টেনে ধরছে। শুধু তাই নয় আলেপা খাতুনকে ফুটবলও খেলতে হয় তাদের সাথে। এছাড়া ঝগড়া বা মারামারিও হয়। সেটাও মীমাংসা করতে হয় তাকে।
পশুর প্রতি আলেপা খাতুনের এক অন্যরকম ভালবাসা। আলেপা খাতুন জানান, প্রতিদিন ৩ কেজি চাউলের ভাত, আধা কেজি দুধ ও মাছ লাগে। তাছাড়া অসুস্থ হলে ওষুধ কেনা থেকে শুরু করে সবমিলিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৩শ’থেকে সাড়ে ৩শ’টাকা খরচ হয়। শুধু সম্মানীর টাকা দিয়ে বিড়ালগুলোর খাওয়ার খরচ হয়না। এরজন্য একমাত্র ছেলে মহরমের কাছে হাত পাততে হয় আলেপাকে। বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া দুই শতক জায়গার উপর দুটো টিনের দোচালা ঘর করে থাকেন কাউন্সিলর আলেপা। সঙ্গে থাকেন ছেলে ও ছেলের বৌ।
তিনি বলেন, ‘আমিই ওদের মা। আমি ছাড়া ওদের দেখবে কে? ওদের (বিড়াল) থাকার ঘর নেই। আমার বিছানায় ঘুমায়। মশারী টাঙিয়ে দিতে হয়। আমার শোবার জায়গা থাকে না! কষ্ট হয়, কিন্তু কি করবো? ওদের থাকার জন্য একটা ঘর করলে ভাল হয় কিন্তু আমার সে সামর্থ্য নেই।’
বাংলা৭১নিউজ/জেএস